বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ৮ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়নে। ৮ম শ্রেণীর ঐ ছাত্রীকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের খাসকামরায় ধর্ষণ করা হয়। উক্ত ঘটনাটি উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কোলা গ্রামের রিক্সা চালক মুন্না সরদারের স্কুল পড়ুয়া মেয়ের সাথে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
ধর্ষক ওই ইউনিয়ন পরিষদের হোল্ডিং প্লোড বিতরণকারী এবং টংগীবাড়ী উপজেলার বেতকা গ্রামের বাসিন্দা মো:সাজিদ (২৫) ছিল। ধর্ষক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের পর কৌশলে ধর্ষণের ভিডিও নিজ মোবাইলে ধারণ করে রাখে। পরে মেয়েটিকে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করে কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়রাম্যান মীর লিয়াকত আলীর খাস কামরায়।
উক্ত ঘটনাটি ঘটে গত ছয়মাস আগে। ওই ইউনিয়নের চেয়রাম্যান মীর লিয়াকত আলী ধামাচাপা দিয়ে রাখলেও বতর্মানে ধর্ষণের ভিডিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যপক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে।
ধর্ষিতা নিজে জানান, আমি ঐ ছেলেকে চিনতাম না। প্রায় ছয় মাস পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা মোঃ বাবু অসুস্থ্য থাকায় তার আপন ভাগ্নি মলি আক্তার ভারপ্রাপ্ত উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করত। তখন মলি আক্তার আমাকে প্রায় কম্পিউটার শেখার কথা বলত। তাই আমি মলি আপুর সাথে কম্পিউটার শেখার জন্য তার সাথে ইউনিয়ন পরিষদে যেতাম। আর ঐ সময় ঐ ছেলে আমার সাথে নানা দুষ্টামি করত,আমার গায়েও হাত দিতো। আমি মলি আপুকে সব বলতাম।
কিন্তু মলি আপু কিছু হবেনা বলতো। কয়েক দিন পরে মলি (আপু) বলেন ঐ ছেলেদের খাবার রান্না করে দিতে। আমাকে অনেক টাকা দিবে। তিনি আরো বলেন, তোর মা আয়ার কাজ করেন তুই ওদের খাবার রান্না করে দিলে ওরা তোকে অনেক টাকা দিবে। তোকে ভালো মোবাইল কিনে দিবে। তখন ঐ ধর্ষক সাজিদ আমাকে ভালো ভালো কথা বলত এবং আমার সাথে প্রেম করত।
প্রায় সময় সাজিদ আমাকে চুমু খেত, জড়িয়ে ধরত আর ছবি তুলত এবং এরই মধ্যে একদিন আমার সাথে এসব ঘটনা করে। এসব ঘটনা ঘটার সাথে সাথে আমি মলি আপুকে সব বলি। মলি আপু বলেন, আর কারো কাছে যেন না বলি। তার পর থেকে আমি আর কোন দিন ঐ ইউনিয়ন পরিষদে যাই নাই। সাজিদ আমাকে ফোন দিতো আমি ওকে বলেছি আপনে আমার সাথে খারাপ কাজ করেছেন। আপনে আমাকে আর কোন দিন ফোন দিবেন না তার পরে আমি আমার ফোন নাম্বার বন্ধ করে দেই।
ধর্ষিতার মা জানান, মলির সহযোগিতায় চেয়ারম্যানের খাসকামরায় আমার মেয়ের জীবনটা নষ্ট করে দিল ঐ লম্পট সাজিদ। মলি ও চেয়ারম্যান সব জানে। কিন্তু এখন আমার মেয়ের সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি এর বিচার চাই, মলি আমার মেয়েকে চেয়ারম্যান অফিসে বার বার ডেকে নিয়ে এই সর্বনাশ করল। চেয়ারম্যান তার ব্যক্তিগত রুমে এই লোক গুলাকে থাকতে দিতো। চেয়ারম্যানের অফিসে আমার মেয়ের এই সর্বনাশ হলো আমি এর বিচার চাই।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী অনেকেই বলেন, ইউপি সচিব ও মলির সহযোগিতায় এই কু-কৃত্তি ঘটিয়েছে। এ ব্যাপারে কোলা ৪, ৫ ও ৬নং মহিলা ইউপি সদস্য রওশন আরা জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। ঘটনাটি শোনার পর আমি মেয়েটাকে জিজ্ঞাসা করেছি মেয়েটা আমার কাছে বলেছে সাজিদ নাকি তাকে ধর্ষণ করেছে। ধর্ষণের ঘটনাটি নাকি কোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাহেবের খাসকামরায় ঘটেছে। বিষয়টি নিয়ে আমি খুবই লজ্জিত।
এ ব্যপারে কোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর লিয়াকত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এসব ব্যপারে এখন আপনাদের কাছ থেকে শুনছি। ইতোপূর্বে আমি এসব ঘটনা শুনিনি বা জানিও না। তিনি আরো বলেন, এই ছেলেকে পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্স কাটার জন্য এনেছিলাম। এ ছেলের পূর্ণ ঠিকানা চাইলে চেয়ারম্যান বলেন আমার কাছে এই ছেলের ঠিকানা নাই। এই ছেলেকে আমার কাছে যে পাঠিয়েছিল আমার সাথে তার ডিড ডুকোমেন্ট আছে।
আমার সচিব ঢাকা গেছেন। সে আসলে আমি তার ঠিকানা দিতে পারবো। সাজিদকে এখানে পাঠান টংঙ্গীবাড়ীর বজ্রজোগীনির গোলাম মোর্শেদের স্ত্রী। এজেন্টের মালিক ঐ মাহিলার সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকার বাহিরে আছেন বলেন জানান, তিনি আরো বলেন সাজিদ আমার ভাতিজা হয় আমি ব্যাপারটা দেখছি।
এ ব্যপারে সিরাজদিখান থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল কালাম জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। তবে অভিযোগ পেলেই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।