বিয়ের পর যখন- বিয়ের পর যখন, আমি বাসর ঘরে গেলাম। তখন, আমার বউ এর মুখ থেকে শুনতে পাই সে ধর্ষিতা! কথাটা শুনে যে, কোনো ছেলের-ই কিছু সময় এর জন্য পৃথিবী টা উলটে যাবে।
কিন্তু, আমি একটুও অবাক হইনি। সাধারণত বাসর রাতেসবাই তাদের ভবিষ্যৎ জিবনের গল্প করে। কিন্তু, আমার বউ তার, ধর্ষণ হবার গল্প করেছে। আমি চাইলে তাকে ওখানেই ফিরিয়ে দিতে পারতাম। কিন্তু, সেটা করিনি কারণ, তাহলে মেয়েটা সকল পূরুষ জাতিকে জানোয়ার ভাবতো।
আমি বিচলিত হই তখন-ই। যখন, জানতে পারি একটা মানুষ রুপি জানোয়ার শুধু মাত্র তার পূরুষত্বের চাহিদা মেটানোর জন্য একটা মেয়ের সত্বিত হরন করেছে। আমি সেই রাতেই ভেবে নিয়েছিলাম আমার জন্য যদি একটা মানুষ তার শেষ হয়ে যাওয়া জীবন টা নতুন করে সাজাতে পারে তাহলে, দোষ কি।
তাই, সব হাসি মুখে বরন করে নিই। বিয়ের সপ্তাহ খানেক পরে ওর বমি, বমি ভাব,,,,মাথা-ব্যাথ এইসব যখন শুরু হয় তখন ল,ও খুব ভয় পেয়ে গেছিলো। আর, কেও কিছু বুঝে ফেলার আগেই,, আমি আমার লজ্জা সরমের মাথা খেয়ে এটা রটিয়ে দিই যে, আমি বিয়ের আগের ওর সাথে শারীরিক ভাবে মেলা মেশা করি। এর জন্য আমি পরিবার থেকে ত্যাগ হয়েছি।
কিন্তু,ওকে ত্যাগ করতে পারিনি। প্রতিরাত-ই ও খুব কান্না করতো যে,আমি যদি কোনো একদিন ওর পাশে না থাকি তাহলে, ওর কি হবে। তখন, আমি ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বুকে জড়িয়ে বলতাম আমি আছিতো পাগলি। আর, সব সময় এভাবেই তোমার পাশে থাকবো। তখন, ও একটু ভরসা পেতো।
একদিন ও আমাকে বলেছিলো যে, ও আমাকে ঠকানোর পরো কেনো আমি ওর সাথে বন্ধুর মতো আচরণ করি। জবাবে আমি বলেছিলাম, কেও ওকে বিশ্বাস করিয়ে ঠকিয়েছিলো সেটা ছিলো ওর নিয়তি। আর, আমি সে নিয়তি কে মুছে দিতে চেয়েছি।
ও সন্তান টা নষ্ট করতে চেয়েছিলো। কিন্তু, আমি না করি। কারণ, সব কিছুই তো আমি মেনেনিয়েছি ঘর ছাড়াও হয়েছি। তাহলে, একটা নিষ্পাপ বাচ্চা কি দোষ করেছে যে, পৃথিবীর আলো দেখার আগেই তাকে বিদাই নিতে হবে। তাই, আর বাচ্চা টা নষ্ট করতে দেইনি।
বিয়ের ৭ মাস পর ওর প্রসব ব্যাথা উঠে। ও এবং আমি দুজনেই জানতাম যে ওই বাচ্চা টা আমার না। তার পরো আমি সেই সময় দূরে সরে যাইনি। পাশে থেকেছি । একজন মা ওই সময় তার সন্তান কে বাচানোর জন্য নিজের সাথে জিবন মরণ লড়াই করে। কিন্তু, নিয়তি ওকে আবারো ঠকালো।
বাচ্চা জন্মনিলো ঠিকি কিন্তু মৃত! একটা মৃত সন্তান জন্ম হবার কিজে বেদনা, সেটা কেবল একজন মা-ই জানে। এর পর দেখতে, দেখতে কেটে গেলো ৫ বছর। আজো ও আর মা হতে পারেনি। সেই দিনি মাত্রিত্বের স্বাধ হারিয়েছে ও।
আমি ওকে জিবনে ঠাই দেবার পর থেকে অনেক, বিপদের মুখো মুখি হয়েছি। অনেক বাধা এসেছে। অনেক কিছু ছেড়েছি। কিন্তু, ওকে ছাড়িনি। ওর বেচে থাকার মূল খুটি টাই আমি। সারাদিন-রাত যখন, কাজ করে মৃত প্রাই সরির নিয়ে বাড়ি ফিরি।
তখন,ওর মুখের একটু হাসি আমাকে শুধু শান্তিই দেয়না।আমি আবার প্রাণ ফিরে পাই। প্রতিটা সময় ও একটা কস্টের ভিতর পড়ে থাকে। রাতে আমার বুকে মাথা রেখে কেঁদে, কেঁদে যখন, আমার জামা ভিজিয়ে ফেলে তখন আমি ওকে সাহস দেই।
নতুন একটা স্বপ্ন দেখাই। হাজারো ব্যাথা বুকে চাপা দিয়ে ওকে একটু হাসি খুশি রাখা টাই আমার নৃত্য দিনের কাজ। এভাবে ওকে ভালো রাখা টা এখন রুটিন হয়ে গেছে। এর মধ্যে মেয়েটা সুইসাইড করতেও গিয়েছিলো।
কিন্তু,পারেনি। আমি ওকে কখনো স্ত্রী মনে করিনি। নিজের দুনিয়া মনে করে সব সময় আগলে রেখছি। ওর সব আবাদার পূরন করেছি। আমি ওর সব ভুল গুলো সুদ্রে দিয়ে ওকে নতুন জীবন দান করেছি। যে,আল্লাহ্ কে সাক্ষী রেখে কলেমা পড়ে ওকে বিয়ে করার সময় যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম। যে, মৃত্তুর আগ পর্যন্ত আমি ওর সাথে থাকবো, ওর কোনো ক্ষতি হতে দেবোনা।
আর, আমি আমার প্রতিজ্ঞা অটল ভাবে রেখে চলেছি। আমি বাবা হতে পারিনি ঠিকি। কিন্তু, ওর কাছে একজন শ্রেষ্ঠ স্বামি হতে পেরেছি।