রাশিয়া এলে ভাষা নিয়ে সমস্যা, খুব সমস্যা এটা জেনেই এলাম। এরা ইংরেজি জানে না ও বলে না। ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের দেখে মুগ্ধ। তারা ইংরেজি ভালো জানে দেখলাম, এক পর্যায়ে হাসি ঠাট্টাও করল।
আহা আমাকে আর পায় কে। কিন্তু না এরপর গুগল ট্রান্সলেটর ই ভরসা। ইংলিশ এর নাম শুনলেই আঁতকে উঠে রাশিয়ানরা। নো ইংলিশ শুনতে শুনতে কান ঝালাপালা। একদিন পর বুঝলাম টিনএজাররা কিছু ইংরেজি জানে। আর তারপর মনে হতে লাগল সংকেত ভাষায় বিশেষজ্ঞ হয়ে যাচ্ছি। মাথা ঝাঁকিয়ে হাত এদিক সেদিকে বাকিয়ে কথা বুঝানো সে কি এক অবস্থা!
নানা দর্শনীয় স্থানের টিকেট কাটতে যেয়ে নাকাল হচ্ছি। অনেক পরে ইংরেজি জানা কেউ এগিয়ে আসে ততক্ষণে আমার অবস্থা, ধুর ছাতার এখানে ঢুকবোই না… একুরিয়াতে ঢুকতে যেয়ে ১০ কিলোমিটার হেঁটে ফেলেছি। পা ব্যথায় বসে পড়লাম ধপ করে। আর যায় কোথায় সিকুউরিটি এসে উপস্থিত। ‘হ্যালো ইয়ং লেডি, হোয়াই ইউ সিট হিয়ার…’ রাগে গা জ্বলে যায় আমার।
আমিও মাথা ঝাঁকাই বলি ‘নো ইংলিশ, নো রাশান, বাংলায় বলেন ভাই’। আর ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকি। সে আরেকজনকে ডেকে হাউ হাউ করে কি সব বলতে থাকে। আর আমার দিকে তাকায়। আমিও বলি, ‘নো ইংলিশ।’ কন্যা শারানা এসে হাত ধরে বলে এখানে বসছ কেন, ‘আমি উঠে দাঁড়াই।
তৃতীয় দিন আবিস্কার করলাম, আমি আর ইংলিশ বলি না! আমি বাংলায় কথা বলি, ওরা রাশান বলে…… এক সময় ওরা বুঝে যায় আমিও বুঝে যাই। হা হা হা। বিশ্বাস হয় না তাই না? একদম সত্যি।
দারুণ ব্যাপার শুধু হাত নেড়ে বুঝাতে হয়, মুখে আমারি বাংলা ভাষা।
লেখক: ওয়ানাইজা রহমান
সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা ন্যাশনালমেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, ঢাকা।