পদার্থবিজ্ঞানী নিউটনের তিনটি সূত্রের কথা সবারই জানা। কিন্তু সেই তিনটি সূত্রের মধ্যে তৃতীয় সূত্রটি ভুল বলে দাবি করেছেন নজমুল হুদা নামের বাংলাদেশের এক গবেষক। তিনি এ-ও বলেছেন, নিউটনের প্রথম সূত্রটি দ্বিতীয় সূত্রে রয়েছে, তাই প্রথম সূত্রটির কোনো প্রয়োজন নেই। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি তাঁর ‘ক্রিয়েশন অব এনার্জি ফ্রম দ্য ক্রিয়েশন’ বা ‘সৃষ্টি থেকে শক্তির সৃষ্টি’ শীর্ষক গবেষণা-তত্ত্ব তুলে ধরেন। এ সময় তিনি আইনস্টাইনের সূত্রকেও গালগল্প বলে উল্লেখ করেন।
নজমুল হুদা বুয়েট থেকে পড়াশোনা করেছেন। একপর্যায়ে তিনি বুয়েটের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগও পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেই চাকরি বেশি দিন করেননি। নজমুল হুদা বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের উপদেষ্টা ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ইউএনডিপির কনসালট্যান্ট হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে তিনি গবেষণা নিয়েই ব্যস্ত। গবেষণা করতে গিয়েই তিনি নিউটনের তৃতীয় সূত্র ভুল বলে আবিষ্কার করেছেন বলে দাবি তাঁর। তাঁর আবিষ্কৃত সূত্র সংশ্লিষ্ট গবেষণাকেন্দ্রে পাঠাবেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
নজমুল হুদা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অঙ্কের হিসাবে একটি বস্তুকে সমদ্রুতিতে চলতে হলে বৃত্তের স্পর্শকের দিকে সমদ্রুতিসম্পন্ন একটি সরল পথে গতি এবং সে গতিকে গোলাকারভাবে রাখার জন্য বৃত্তটির কেন্দ্রমুখী একটি টান অথবা ঠেলাযুক্ত বল দরকার। কিন্তু নিউটনের সূত্রগুলো অনুসারেই সমদ্রুতিতে চলার জন্য বল শূন্য (যদি বা বিশ্বে এমন কিছু থেকে থাকে) অথবা শূন্য লব্ধি বলের সঞ্চারপথেই তা সম্ভব, যা সব সময় সেই বৃত্তের স্পর্শকের দিকে না-ও হতে পারে এবং তাত্ক্ষণিকভাবে ঘূর্ণন অবস্থা থেকে সরল পথে চলার প্রশ্নটি তো থেকেই যাচ্ছে।
অতএব, নিউটনের একক ক্রিয়াসম্পন্ন ‘সর্বজনীন’ বস্তু বস্তুকে পারস্পরিকভাবে টানার সূত্রটি দিয়ে আকাশের যাবতীয় বস্তুর ঘূর্ণমান গতি ব্যাখ্যা করতে ব্যর্থ হয়ে সেগুলোকে বরং এক জায়গায় জড়ো করা এবং তা করতে যেয়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথাই বলে।’ তিনি আরো বলেছেন, “আপেল পড়া থেকে যে নিউটনের মাথায় ‘আকর্ষণ’-এর চিন্তাটি এসেছিল বলে প্রচার করা হয় তা সঠিক না-ও হতে পারে।”
তিনি আরো বলেন, সমকালীন মডার্ন পদার্থবিদ্যার বইগুলোতে সাধারণত ‘রিলেটিভিটি’ অধ্যায় দিয়ে শুরু করা হয়, অন্যান্য বিষয় ছাড়াও যার মধ্যে আইনস্টাইনের দুটি ‘রিলেটিভিটি’ থিওরিই, ‘টাইম ডাইলেসন,’ ‘ভর ও শক্তি’, ‘টুইন প্যারাডক্স’ ইত্যাদি বিষয় থাকে। এ সব বিষয়ই ‘টাইম ডাইলেসন’-এর ওপর নির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠেছে এবং ‘টাইম ডাইলেসন’ হলো একটি মনগড়া বিদ্যা। তিনি তাঁর দাবির সপক্ষে নিজস্ব ব্যাখ্যা তুলে ধরেন। সংবাদ সম্মেলনে নজমুল হুদার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিল। এ ছাড়া বুয়েটে তাঁর একসময়ের সহপাঠীদের কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন।–কালের কন্ঠ