দিনমজুরকে ফাঁসাতে গিয়ে দুই পুলিশ জনতার রোষাণলে পড়ে গণপিটুনি

মানিকগঞ্জে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে এক দিনমজুরকে আটক করে থানায় নেয়ার সময় জনতার রোষাণলে পড়েন দুই পুলিশ সদস্য। এসময় বিক্ষুব্দ জনতা তাদের গণপিটুনি দিয়ে আটকে রাখে। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্যের হস্তক্ষেপে কোনো মতে রক্ষা পান তারা।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ছোট কালিয়াকৈর নতুন বাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাইর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক ও কনস্টেবল জাহিদ একটি মোটরসাইকেল নিয়ে বলধরা ইউনিয়নের ছোট কালিয়াকৈর নতুন বাজার এলাকায় যান। ওই বাজারের কহিনুর ইসলামের কসমেটিকের দোকানের সামনে থেকে সাদা শার্ট ও লুঙ্গি পড়া দিনমজুর হাসেম আলীকে ধরে তার পকেটে দুটি ইয়াবা ঢুকিয়ে দেন তারা।

এরপর হাশেম আলীকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় উপস্থিত এলাকাবাসী তাৎক্ষণিক এর প্রতিবাদ করেন এবং এক পর্যায়ে ওই দুই পুলিশ সদস্যকে ঘেরাও করেন। উত্তেজিত জনতা তাদেরকে মারধর করতে উদ্যত হলে স্থানীয় বলধরা ইউনিয়নের ওয়ার্ড সদস্য ইদ্রিস আলীসহ কয়েকজন তাদের রক্ষা করেন।

খবর পয়ে সিঙ্গাইর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন দ্রুত ঘটনাস্থলে যান। এলাকাবাসীর সঙ্গে দুই ঘণ্টা আলোচনার পর তিনি ওই দুই পুলিশ সদস্যকে মুক্ত করে থানায় নিয়ে যান।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এলাকায় পুলিশের সোর্স হিসেবে পরিচিত ফরহাদ পুলিশের সঙ্গে যোগসাজশে নিরীহ লোকদের মাদকের মামলায় আটক করে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন। আর এই টাকার ভাগ ফরহাদের পকেটে যায়।

ভুক্তভোগী হাসেম আলী জানান, তিনি সন্ধ্যায় বাজারে থেকে ওষুধ কিনে বাড়ি ফেরার পথে বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় সাদা পোশাকে দুই লোক এসে তার লুঙ্গি ও শার্ট ধরে টানাটানি করে। এরপর তার পকেটে জোড় করে কি যেন ঢুকিয়ে দিয়ে হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দেয়। এরপর তারা বলে পকেটে দুটি ইয়াবা পাওয়া গেছে।

সিঙ্গাইর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে গিয়ে হাশেম আলীকে আটক করে। কিন্তু পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় হাশেম আলী একজন ভালো ছেলে। পড়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তথ্যদাতা পুলিশকে হাশেম আলী সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

ইয়াবা দিয়ে দিনমুজুর হাশেম আলীকে ফাঁসানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যপারে আমার কিছু জানা নেই।

মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামিম বলেন, বিষয়টি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। এমন ঘটনায় পুলিশ বা সোর্স যেই জড়িত থাকুক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।