পাকিস্তানে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পৃথক দুটি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৩২ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে একজন প্রার্থীও রয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছে দুই শতাধিক। শুক্রবার দেশটির বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকায় এসব হামলার ঘটনা ঘটে। বেলুচিস্তানের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
পাকিস্তানি গণমাধ্যমে বলা হয়েছে, বেলুচিস্তানের মুস্তাং এলাকায় একটি নির্বাচনী সমাবেশে আত্মঘাতী হামলায় প্রদেশের নির্বাচনী এলাকা-৩৫ এর প্রার্থী নবাবজাদা সিরাজ রাইসানিসহ ১২৮ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে দুই শতাধিক।
এর কয়েক ঘণ্টা আগে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু এলাকায় একটি মোটরসাইকেল বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল দলের প্রার্থী আকরাম খান দুররানি বেঁচে গেলেও চারজন নিহত হয়। এ ছাড়া অন্তত ৩০ জন আহত হয়।
স্থানীয় গণমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলুচিস্তানের ওই আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে নিষিদ্ধঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের ‘গাজি ফোর্স’। আর এক্সপ্রেস ট্রিবিউন বলেছে, ইসলামিক স্টেট ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে।
নিহত সিরাজ রাইসানির ভাই লস্করি রাইসানি বলেছেন, ‘আমার ভাই ‘শহিদ’ হয়েছেন।’ তিনি নিজেও এই নির্বাচনে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর তাদের ভাই নবাব আসলাম রাইসানি ২০০৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বেলুচিস্তানের মুখমন্ত্রী ছিলেন।
বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আঘা উমর বাঙ্গুলজাই বলেছেন, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২৮ হয়েছে। সিরাজ রাইসানিকে কুয়েত্তার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় বলেও জানান তিনি।
প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী মালিক খুররম শেহজাদ নিশ্চিত করেছেন যে, এটি আত্মঘাতী হামলা ছিল। ডন বলছে, হামলায় অন্তত ৮ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। আর ট্রিবিউন বলছে, ১৫ কেজির মতো বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে। আর আত্মঘাতী হামলাকারী সমাবেশ মঞ্চের খুব কাছাকাছি ছিল বলে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানিয়েছে ডন।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৫ জুলাই পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই দেশটির বিভিন্ন প্রান্তে নানা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার আরেকটি উল্লেখযোগ্য হামলার ঘটনা ঘটে। ওইদিন পেশোয়ারে আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টির এক জনসভায় আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়।
ওই হামলায় ৭৮ নির্বাচনী এলাকার প্রার্থী হারুন বিলাওয়ারসহ ২২ জন নিহত হয়। আহত হয় অন্তত ৬০ জন। ওই হামলারও দায় স্বীকার করে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান।