এই ‍‍`অপয়া‍‍`র কারণে হেরেছে ইংল্যান্ড!

জ্যাগার তার প্রিয় দলকে সমর্থন করবেন আর সেই দল হারবে না তা কি করে হয়! ইংল্যান্ড-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচেও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। আগে জানলে গ্যারেথ সাউথগেট নিশ্চয় মিক জ্যাগারকে মাঠে ঢোকার আগেই হাতজোড় করে বলতেন, ‘আর যাই হোক, দয়া করে গ্যালারিতে থাকবেন না। ইংল্যান্ডকে এভাবে ডোবাবেন না প্লিজ।’ জ্যাগার গ্যালারিতে এলেন, আর স্বপ্নের ফাইনালের আগেই তীরে এসে তরী ডুবল ইংল্যান্ডের। কিন্তু সেটার দায় নিশ্চয়ই জ্যাগারের নয়। তা অবশ্যই নয়, কিন্তু বার বার এরকম হতে থাকলে রোলিং স্টোনসের এই কিংবদন্তি গায়ককে ‘কুফা’ না বলেও উপায় থাকে না আসলে!

সেই ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু। সেবার ফ্রান্সে আর্জেন্টিনার সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন। সেই ম্যাচ হেরেছিল ইংল্যাণ্ড। তবে জ্যাগারের অপয়া তকমাটা লাগতে শুরু করে ২০১০ বিশ্বকাপ থেকে। দক্ষিণ আফ্রিকার পৌঁছেই ঘোষণা দিলেন, ইংল্যান্ড, ব্রাজিল ও যুক্তরাষ্ট্র, সবাই নক আউট পর্বে নিজেদের ম্যাচ জিতবে।

শুরুটা হলো ঘানার কাছে যুক্তরাষ্ট্রের হার দিয়ে। এরপর ইংল্যান্ডের ম্যাচে গ্যালারিতে ছিলেন, জার্মানির কাছে সেই ম্যাচ হারল থ্রি লায়ন্সরা। ব্রাজিলের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ, সেখানে আবার জ্যাগারের সঙ্গে ছিলেন তার সাবেক ব্রাজিলিয়ান প্রেমিকার সঙ্গে একমাত্র সন্তান। ব্রাজিল ওই ম্যাচ হারল নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে।

২০১৪ সাল। এবার ব্রাজিলেও জ্যাগার গ্যালারিতে। ইংল্যান্ডের সঙ্গে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ছিলেন না, তবে ম্যাচের আগে টুইট করেছিলেন। ফলাফল? গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল ইংল্যান্ড। জ্যাগার দমলেন না, ব্রাজিলে উড়ে এলেন তার ব্রাজিলিয়ান সন্তানের সঙ্গে। ফলাফল? জার্মানি ব্রাজিলকে উপহার দিল ৭-১ গোলের দুঃস্বপ্ন। জ্যাগার পরে মজা করে বলেছিলেন, ‘জার্মানির প্রথম গোলের দায় আমি নিতে পারি, পরের ছয়টি নেব কেন?’

গত বছর জ্যাগার একটা গান বাঁধলেন, ‘ইংল্যাণ্ড লস্ট’ নামে। অবশ্য সেটার সঙ্গে ইংল্যান্ড দলের সম্পর্ক যতটা, ততটাই ছিল ব্রেক্সিটের। কথা ছিল এরকম, ‘আমি ইংল্যান্ডের খেলা দেখতে গিয়েছি, আর ইংল্যান্ড হেরে গেছে।’

এরপর এই বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত ছিলেন না মাঠে। সেমিফাইনালে ফ্রান্স-বেলজিয়াম ম্যাচে প্রথম দেখা গেল তাকে। এরপর ইংল্যান্ডের সঙ্গে না এলেই ভালো হতো। কিন্তু এবার এলেন, আর ঘরে ফিরল ইংল্যান্ড। জ্যাগারের কাছে একটা ক্ষমা বোধ হয় পাওনা আছে সাউথগেটের!