চাঁদপুর মতলবের তাজুল ইসলাম গত ১১ জুন ইংল্যান্ডের নিউ ক্যাসেল থেকে বাংলাদেশে আসেন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমে মালামাল ট্রলিতে করে বাইরে নিয়ে আসেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর একটি ভাড়া গাড়ি পান। মালামাল গাড়িতে উঠানোর সময় দেখেন ট্রলিতে একটা লাগেজ নেই। যাতে সাড়ে তিন হাজার পাউন্ড, একটি ডেল ল্যাপটপ, এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ, মোবাইল, ক্যামেরাসহ অনেক মূল্যবান মালামাল ছিল। তিনি বিমানবন্দর আর্মড পুলিশে অভিযোগ করলে আর্মড পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সিসিটিভিতে চিহ্নিত করে তাদের নিজস্ব ফেসবুক পেজে সন্ধান দিন নামে স্ট্যাটাস পোস্ট করে।
পরবর্তীতে অভিযুক্ত ব্যক্তি বরগুনা জেলার বেতাগী থানার চরখালী গ্রামের মৃত আবদুর রহমান খানের পুত্র মো. নবীন খান (৩২) হিসেবে শনাক্ত হন। ২৩ দিন পর তাকে বিমানবন্দর এলাকা থেকে চোরাই মালামালসহ গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি নিউক্যাসেল ইউনিভার্সিটির মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক। আবুধাবি প্রবাসী হুমায়ুন কবির গত ২৬ জুন ইতিহাদ এয়ারওয়েজ যোগে ঢাকা বিমানবন্দরে আসেন। এয়ারওয়েজে থাকাকালীন সময়ে তার সঙ্গে পরিচয় হয় চুয়াডাঙ্গার প্রবাসী মোহাম্মাদ বিল্লাল হোসেনের। যার ফলে তিনি নিজের আসন ছেড়ে বিল্লালের পাশের ফাঁকা সিটে বসেন। কিন্তু বিমান অবতরণ করলে বিল্লাল হুমায়ুনের ব্যাগ নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় চলে যায়। এরপর এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের কাছে তিনি অভিযোগ করলে তারা চুয়াডাঙ্গা পুলিশের সহায়তায় ৪৮ ঘণ্টা পরে হ্যান্ডব্যাগটি উদ্ধার করে। হুমায়ুন কবির নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার কুতুবপুর গ্রামের সাহাব উল্লাহের পুত্র। বিমানের একজন যাত্রী রাজিয়া বেগম (৩২) সৌদি এয়ারলাইনসযোগে সৌদি আরব থেকে ঢাকা বিমানবন্দরে আসেন। তিনি ফার্মগেট যাওয়ার জন্য ভাড়ার গাড়ি খুঁজছিলেন।
এ সময় ফারুক ওরফে ইমন (৩১) এবং মানিক মিয়া ওরফে রতন (৩৫) তাকে জিজ্ঞেস করেন কোথায় যাবেন। ফার্মগেট বললে তারাও বলে আমরাও ফার্মগেট যাব। পরবর্তীতে তারা ওই যাত্রীর লাগেজ দুজনে নিয়ে যাত্রীসহ বিমানবন্দর গোলচত্বরের দিকে যেতে থাকে। এ সময় আর্মড পুলিশ সদস্যদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের ভুল নাম বলে এবং এত সকালে বিমানবন্দরে আসার কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি। পরবর্তীতে বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে নিয়ে গেলে বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট তাদের তিন মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, আসামি ফারুক কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি থানার বোর্ডবাজার গ্রামের আবদুল মোতালেবের ছেলে এবং অপর আসামি মানিক মিয়া ময়মনসিংহের ভালুকা থানার কুল্লাবর গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে। এমন ঘটনা শাহজালাল বিমানবন্দরের নিত্যদিনের ঘটনা। ছদ্মবেশী অপরাধীরা বিমানবন্দরে ঘোরাফেরা করে। যাত্রীদের গাড়ি সেবা দেওয়ার কথা বলে তাদের মালামাল নিয়ে চম্পট দেয়। তাদের টার্গেট প্রবাসী বাংলাদেশি। পুলিশ জানায়, প্রবাসী যাত্রীরা যদি সচেতন হয় তাহলে এমন হয়রানি থেকে তারা রক্ষা পেতে পারে। যদি এমন সমস্যায় পড়েই যায়, তবে পুলিশকে দ্রুত জানাতে হবে।–বাংলাদেশ প্রতিদিন