কলা খেয়ে খোসাটা ফেলেই দেন সবাই। তাও আবার যেখানে সেখানে। আর তাতে করে সেই কলার খোসায় পা পিছলে পা মচকে যাওয়ার ভয় তো থাকেই। মজার ব্যাপার হলো এই কলার খোসার রয়েছে অনেক উপকারিতা। যা জানলে আর কখনোই খোসা ফেলে দিতে চাইবেন না! কলার খোসায় রয়েছে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান, অ্যান্টি-বায়োটিক প্রপাটিজ, ফাইবার এবং একাধিক পুষ্টিকর উপাদান যা শরীরের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেইসঙ্গে নানাবিধ সংক্রমণ এবং পেটের রোগকেও দূরে রাখে।
যেকোনো ধরনের যন্ত্রণা কমাতে কলার খোসার বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এই প্রকৃতিক উপদানাটির অন্দরে উপস্থিত অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, শরীরে প্রবেশ করার পর যন্ত্রণা কমে যেতে সময় লাগে না। যন্ত্রণার জায়গায় কম করে ৩০ মিনিট কলার খোসা ঘষলেও কিন্তু সমান উপকার পাওয়া যায়।
নিয়মিত কলার খোসা খাওয়ার পাশাপাশি যদি কম করে পাঁচ মিনিট খোসাটা সারা মুখে ঘষা যায়, তাহলে একদিকে যেমন ব্রণের প্রকোপ কমতে শুরু করে, তেমনি যে কোনও ধরনের দাগ মিলিয়ে যেতেও সময় লাগে না। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায় চোখে পরার মতো।
একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত কলার খোসা খাওয়া শুরু করলে দাঁতের হলুদ ভাব কেটে যেতে সময় লাগে না। সেইসঙ্গে মুখ গহ্বরে এমন কিছু উপাদানের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে যে মুখগহ্বর সম্পর্কিত কোনো রোগই মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে না।
কলার খোসায় রয়েছে প্রচুর মাত্রায় সেরোটনিন, যা নিমেষে মন ভালো করে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সম্প্রতি তাইওয়ান ইউনিভার্সিটির তত্ত্বাবধানে হওয়া একটা গবেষণা অনুসারে টানা তিন দিনে যদি ২টি করে কলার খোসা খেলে শরীরে সেরোটনিনের মাত্রা প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ফলে অবসাদের প্রকোপ কমতে শুরু করে।
শরীরে যাতে লোহিত রক্ত কণিকার সংখ্যা হ্রাস না পায়, সেদিকে খেয়াল রাখে কলার খোসা। ফলে অ্যানিমিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে।
ফাইবার শুধু কোলেস্টেরল কমায় না। সেই সঙ্গে ওজন হ্রাসেও সাহায্য করে। আসলে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার পরে পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভর্তি থাকে। ফলে বেশি মাত্রায় খাবার খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায়। সেই সঙ্গে শরীরে ভালো ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যারা হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়। এইভাবে কলার খোসা ওজন কমাতে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
ট্রাইপটোফেন নামে এক ধরনের রাসায়নিক থাকে কলার খোসায়, যা ঘুম আসতে সাহায্য় করে। তাই তো যারা অনিদ্রার শিকার, তারা আজ থেকেই কলার খোসা খোয়া খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেন।
কলার খোসা, কোলোনে উপস্থিত ভালো ব্যাকটেরিয়াদের সংখ্যা বৃদ্ধি করে, যা ধীরে ধীরে শরীরে জমে থাকা টক্সিক উপাদানদের বার করে দেয়। সেই সঙ্গে কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও দূর করে।
কলার খোসায় রয়েছে লুটিন নামে একটি উপাদান, যা দৃষ্টি শক্তির উন্নতি ঘটানোর পাশাপাশি ছানি প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।