ত্রি-রত্নের নতুন মিশন

চাওয়া ও পাওয়ার কখনো শেষ নেই। নতুন চাহিদা সৃষ্টির মাধ্যমে মানুষের আকাক্সক্ষা তৈরি হয়। আর সেই আকাক্সক্ষা কখন যে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে কেউ জানে না। অবশ্য এটা জীবনবোধ। এটার সঙ্গে বিশ্বকাপের কোনো সম্পর্ক থাকার কথা নয়। আবার সম্পর্ক আছেও। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল বিশ্বকাপ জিততে আসেনি। তবে তারা আরও ভালো ফল আশা করেছিল। অপর দুই রতœ মেসি ও নেইমারের কাছে অবশ্য প্রত্যাশা বেশি। ব্রাজিল পাঁচ ও আর্জেন্টিনা দুবারের চ্যাম্পিয়ন।

ব্রাজিল প্রতিটি বিশ্বকাপে আসেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য। অন্য কোনো পজিশন তাদের মানের ও নামের সঙ্গে মানায় না। আর ম্যারাডোনা ১৯৮৬ সালে যে ক্রেজ দেখিয়েছেন সেটা থেকে সমর্থকদের মেসিকে ঘিরে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। আর হবেই না কেন! মেসি একাই আর্জেন্টিনাকে তিনটি ফাইনালে তুলেছেন। ক্যারিয়ারে বড় আসরের চারটি ফাইনাল খেলে ফেলেছেন। তবে ওই যে জীবনে এমন কিছু নেই যেটা মেসি জেতেননি। এই শিরোপাটাই কেবল পেল না হালের দুই সুপারস্টার। রোনালদো দেশের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন। তবে বিশ্বকাপ তো বিশ্বকাপই। মেসি ও নেইমারের অলিম্পিক স্বর্ণপদক আছে। নেইমার আবার কনফেডারেশন্স কাপও জিতেছেন। তবে হয় না। বিশ্বকাপের কাছে সব মলিন!

বিশ্বকাপের মিশন তো শেষ। এবার কী? আবার নতুন দিনের স্বপ্ন দেখা? এই তিনজন অমন মানুষই নন। হয়তো দশ-পনেরো দিন চুপ করে থাকবেন। আবার ঠিকই জেগে উঠবেন। ইতোমধ্যে তিনজনের নতুন মিশন এসে দরজায় কড়া নাড়ছে। রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদ ছেড়ে জুভেন্টাসে পাড়ি জমানোর মতলব করছেন। মেসি বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে হেরে বার্সেলোনায় চলে গেছেন।

সেখানে রোকুজ্জো, থিয়াগো ও মাতেয়োকে সময় দিচ্ছেন। নেইমার আপাতত প্যারিসে ফিরবেন। গুঞ্জন বেশ জোরালো হয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদে আসবেন ব্রাজিলিয়ান এই যুবরাজ। আর রিয়ালের কর্তা ফিওরেন্টিনো পেরেজের সঙ্গে কথাও হয়েছে। ফুটবল বিশ্বের মেরুই পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। এতদিন বিশ্ব লা লিগায় মেসি আর রোনালদোর লড়াই দেখেছে। এখন নেইমার-মেসির লড়াই হবে। নেইমার বার্সেলোনায় থাকার সময় মেসির সঙ্গে ভালো খেলেছেন। এক মৌসুমে ট্রেবলও আছে। বন্ধু এখন শত্রæ হওয়ার উপক্রম।

বিশ্বকাপের পর গুঞ্জন উঠেছিল মেসি ও রোনালদো অবসর নেবেন। রোনালদো জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ফিট আছেন। আর ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে তাকে দেখা যাবে। মেসিও ভক্তদের আশা দিয়েছেন। ফিট থাকলে কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত আছেন। আর নেইমার তো আছেনই। তিনি খেলবেন ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ। এই বিশ্বকাপে নেইমার-মেসি-রোনালদো এক বিন্দুতে। কে সেরা এটা নিয়ে আর কয়েক দিনের মধ্যে আবার সাপোর্টারদের তুমুল তর্ক-বিতর্ক শুরু হবে। তবে এই বিশ্বকাপের ফাইনাল পর্যন্ত সবাই চুপ থাকবেন। আবার লিগ মৌসুম শুরু হলে সবাই হতাশা, গøানি, মনের ব্যথা ভুলে যাবেন।