শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হেরে গেলেন আর্জেন্টিনার সেই সমর্থক

আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের ভক্ত ছিলেন ৪০ বছর বয়সী তৌহিদ-ই-মোর্শেদ সুমন। শুধু তিনিই নন, তার পরিবারের সব সদস্যই একই দলের সমর্থক। বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে তাই নির্মাণাধীন বাড়ির ছাদে প্রিয় দলের পতাকা টাঙাতে গিয়েছিলেন সুমন। আর তখনই বিদ্যুৎস্পর্শে গুরুতর আহত হন। সেই থেকে টানা ২১ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবশেষে শুক্রবার বিকেলে তার মৃত্যু হয়।

মৃতের ভগ্নিপতি আরশাদুল মোকাদ্দেস হাসপাতালে জানান, মিরপুর-১৩ নম্বর সেকশনের ১৮ নম্বর টিনশেড কলোনি এলাকায় নিজেদের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন সুমন। তিনি ফুটবল খেলা দেখতে খুবই ভালোবাসতেন। ফুটবলের বিভিন্ন টুর্নামেন্টের ম্যাচগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখতেন। আর বিশ্বকাপ এলে তো কথাই নেই। তাদের বাসাতেই যেন শুরু হতো ফুটবল উৎসব। এবারও বিশ্বকাপ উপলক্ষে ১৫ জুন বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সুমন তাদের নির্মাণাধীন বাড়ির তৃতীয়তলার ছাদের রডে আর্জেন্টিনার পতাকা টাঙাতে যান। এ সময় রডটি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনে লেগে বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে। তখন তিনি রডটি ছেড়ে দিলেও তার পায়ের সঙ্গে রডের স্পর্শ লাগে। এতে বিদ্যুৎস্পর্শে গুরুতর দগ্ধ হন সুমন। দ্রুত তাকে নেওয়া হয় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।

ঢামেক বার্ন ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্তলাল সেন জানান, সুমনের শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। দগ্ধ হওয়ার কয়েকদিন পর তার দুই পা কেটে ফেলতে হয়। তবু শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান তিনি।

পারিবারিক সূত্র জানায়, সুমনের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায়। তার স্ত্রী ও দুই সন্তান রয়েছে। সুমনের বাবা প্রয়াত আবুল কাশেম ভূঁইয়া।

এবারের ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের পতাকা লাগাতে গিয়ে কমপক্ষে সাতজন বিদ্যুৎস্পর্শে ঢামেক বার্ন ইউনিটে ভর্তি হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই কিশোর বা যুবক।