৪০৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করলো মালয়েশিয়া

রাষ্ট্রীয় তহবিল ওয়ানএমডিবি দুর্নীতি তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্দেহে ৪০৮টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করেছে মালয়েশিয়া। সোমবার দেশটির কর্মকর্তারা এই ঘোষণা দিয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এখবর জানিয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি তদন্তে সরকারের পদক্ষেপের মুখে এই ঘোষণা আসলো।

রাষ্ট্রীয় তহবিলের এই দুর্নীতি তদন্তে সরকার একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে। গত সপ্তাহে জব্দ করা এসব অ্যাকাউন্টে প্রায় ১১০ কোটি রিঙ্গিত রয়েছে। টাস্কফোর্সের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওয়ানএমডিবি তহবিল লোপাট ও অপব্যয়ের কাজে এসব অ্যাকাউন্ট জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অ্যাকাউন্টধারীদের নাম প্রকাশ না করে বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১১ সালের মার্চ থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এগুলোতে প্রায় ৯০০টি লেনদেন হয়েছে। জব্দ করা অ্যাকাউন্টগুলোতে অর্থ এসেছে বিভিন্ন ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল ও বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) থেকে। এর আগে মালয়েশিয়ার স্থানীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, জব্দকৃত অ্যাকাউন্টগুলোর মধ্যে নাজিব রাজাকের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড মালয় ন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের (ইউএমএনও) অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

৯ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নাজিবের ইউএমএনও জোট বারিসান নাসিওনাল জোটের কাছে হারলে দলের প্রধানের দায়িত্ব ছাড়েন তিনি। তার বিরুদ্ধে ওয়ানএমডিবির দুর্নীতি ও অর্থ লোপাটের তদন্ত চলছে। নাজিব ও তহবিল কর্তৃপক্ষ দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।

বুবলীর সঙ্গে প্রেম নিয়ে বিভিন্ন সময় শাকিব খানের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়েছে। সব সময় তিনি বলেছেন, ‘আমার সহশিল্পী যাঁরা হন, আমার সঙ্গে যাঁরা কাজ করেন অথবা আমি যাঁদের সঙ্গে কাজ করি—তাঁদের সবার সঙ্গে আমার একটি সুন্দর সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি, একটি ভালো সম্পর্ক যদি দুজন শিল্পীর মধ্যে তৈরি না হয়, তাহলে সুন্দর একটি কাজ করতে পারব না। এটা সৃষ্টিশীল কাজ, এখানে নায়ক-নায়িকার বোঝাপড়া থাকতে হবে। ছেলে-ছেলে হোক কিংবা মেয়ে-মেয়ে হোক, যাঁরাই কাজ করেন—সুন্দর একটি বন্ধুত্বের মধ্য দিয়ে ভালো কাজ করার চেষ্টা করেন। এর বেশি কিছু বলার নেই।’

শুধু চলচ্চিত্রের মানুষ নয়, ভক্তদের মধ্যে এই দুজনের সম্পর্ক নিয়ে রয়েছে জোর গুঞ্জন। বিষয়টিকে ইতিবাচকভাবে দেখেছেন চিত্রনায়িকা বুবলী। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক, আমাদের সম্পর্ক নিয়ে দর্শকের অনেক আগ্রহ থাকে। তাঁরা নিজেরাই অনেক কিছু অনুমান করে ভাবতে থাকেন। কিছু ক্ষেত্রে কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে পড়েন। তা শিল্পীদের জন্য ইতিবাচক।’

শাকিব খানের সঙ্গে বিয়ের সম্পর্ক থাকা অবস্থায় বুবলীর ওপর চড়াও হন অপু। গত বছর ১৮ মার্চ বুবলীর ফেসবুকে পোস্ট করা একটি ছবিকে কেন্দ্র করে এই পরিস্থিতির সূত্রপাত। পোস্ট করা সেই ছবিতে দেখা যায়, বুবলীর পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ‘নিপাট ভদ্র ছেলে’ শাকিব খান বসে আছেন। ক্যাপশনে লেখা ছিল ‘ফ্যামিলি টাইম’। এই ছবি দেখে অপু এতই ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন যে বুবলীকে ফোন করে গালমন্দ পর্যন্ত করেছিলেন। তবে বিষয়টি শাকিব এড়িয়ে গেছেন। একপর্যায়ে শাকিব ও অপুর ছাড়াছাড়ি হয়। এর পেছনে অনেকে দায়ী করেন বুবলীকে।

একসময়ের সংবাদ উপস্থাপিকা বুবলীর প্রথম ছবি ‘বসগিরি’ ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। একই সময়ে মুক্তি পায় ‘শুটার’ নামে আরেকটি ছবি। এরপর একে একে বুবলীর মুক্তি পাওয়া ছবিগুলোর মধ্যে আছে ‘রংবাজ’, ‘অহংকার’, ‘চিটাগাইঙ্গা পোয়া নোয়াখাইল্যা মাইয়া’ ও ‘সুপার হিরো’।

২০০৬ সালে ‘কোটি টাকার কাবিন’ ছবির মধ্য দিয়ে দেশের চলচ্চিত্রে প্রথম জুটি বাঁধেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। এই জুটির প্রথম ছবি ব্যবসায়িকভাবে সাফল্য পায়, রাতারাতি সবার নজরে পড়েন তাঁরা। ১০ বছরে এই জুটি উপহার দেন অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি। শাকিব খানের চলচ্চিত্রজীবন শুরু হয় সোহানুর রহমান সোহানের ‘অনন্ত ভালোবাসা’ ছবি দিয়ে। এই ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেন ইরিন জামান। নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে শাকিব খান ওই সময়ের জনপ্রিয় ও আলোচিত নায়িকা শাবনূর, পপি, পূর্ণিমা, মুনমুন, কেয়াসহ অনেকের সঙ্গে জুটি বাঁধেন। শুরুর দিকে অপু বিশ্বাস পিছিয়ে থাকলেও পরে অন্যরা পিছিয়ে যান, শাকিবকে নিয়ে এগিয়ে যান অপু। শাকিবের সঙ্গে অপুর ছবি মানেই আলোচনা, ব্যবসায়িক সাফল্যও। শাকিব আর অপু জুটি এতটাই আলোচিত হয় যে অন্য কোনো নায়কের সঙ্গে অপুকে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। হাতে গোনা দু-একজন নায়কের বিপরীতে অভিনয় করেন। এসব কারণে দুজনকে নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়।

অনেক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় অপুকে। কেন অন্য নায়কের সঙ্গে অভিনয় করছেন না? অপু বলেছিলেন, শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর জুটি দর্শক দারুণভাবে গ্রহণ করেছে। এই জুটিকেই দর্শক দেখতে চান। তা ছাড়া অন্য নায়কের বিপরীতে কাজ করতে কোনো সমস্যা নেই।

সরাসরি কিছু না বললেও পরোক্ষভাবে শাকিব বা অপু নিজেদের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে কাজ করতে চাননি। কোনো প্রযোজক-পরিচালক নাকি শাকিব খানের কাছে ছবি নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে গেলে তাঁদেরকে নায়িকা হিসেবে অপুকে নেওয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন শাকিব। ক্ষেত্রবিশেষে নাকি তাঁরা অপুকে নিতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ তত দিনে শাকিব খান দেশের চলচ্চিত্রে অপরিহার্য হয়ে গেছেন। ব্যবসায়িক স্বার্থের কথা ভেবে শাকিবকে নিয়ে ছবির কাজ শেষ করার জন্য প্রযোজক-নির্মাতারা মুখ খুলতেন না। চাষী নজরুল ইসলাম তাঁর ‘দেবদাস’ ছবিতে ‘পার্বতী’ চরিত্রের জন্য পূর্ণিমাকে নিতে চেয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত শাকিবের কারণে অপুকেই নিতে বাধ্য হন।

সময় যেতে থাকে, শাকিব ও অপুর মধ্যে আচরণগত পার্থক্য উপলব্ধি করেন প্রযোজক-পরিচালক আর সহশিল্পীরা। একপর্যায়ে অপু বিশ্বাসের সম্মানী, শিডিউল থেকে শুরু করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করতেন শাকিব খান। অপুর অভিনয়ের বিষয়ে প্রযোজক বা পরিচালকদের শুধু শাকিবের সঙ্গে কথা বললেই হতো। ২০০৮ সালে এসে দুজনের মেলামেশা এতটাই নিয়ন্ত্রিত ছিল যে বছরের মাঝামাঝি গুজব ছড়ায়, অপু বিশ্বাসকে গোপনে বিয়ে করেছেন শাকিব খান। এরপর যতবারই শাকিবকে বিয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হয়, ততবারই তিনি অস্বীকার করেছেন। শাকিব আর অপু বলেছেন, তাঁরা দুজন শুধুই ‘ভালো বন্ধু’। এর বাইরে অন্য কিছু নাকি তাঁরা ভাবতেও চান না। ২০১১ সাল থেকে শাকিব বলেন, বছর দু-একের মধ্যেই বিয়ে করবেন তিনি। তাঁর সেই ‘বছর দু-এক’ আর শেষ হয়নি।

বিয়ে করে দিব্যি সংসার করছেন, অথচ অপু বিশ্বাস বলে বেড়ান, শাকিব খানের বিয়ে নিয়ে তাঁর রয়েছে রাজ্যের পরিকল্পনা। শাকিবের বিয়েতে নাচবেন। শুধু তা-ই নয়, ডালা-কুলা যাঁরা নেবেন, তাঁদের নেতৃত্ব দেবেন। অনেক মজা করবেন। শাকিব ও অপু নিজেদের বিয়ের গুজব নিয়ে আরও বলেন, ‘জনপ্রিয় জুটিদের নিয়ে বিয়ে আর প্রেমের গুঞ্জন থাকবেই। এর আগেও জনপ্রিয় জুটিদের নিয়ে এমন গুঞ্জন উঠেছে।’

শাকিব ও অপু এমনভাবে কথা বলতে থাকলেন, নিজেদের বিয়ের খবরকে অনেকের কাছে মিথ্যা হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হন। শাকিব ও অপুর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মিথ্যা বলার এমন প্রবণতায় বিয়ের সাক্ষীরাও চুপসে যান। এখন অবশ্য শাকিব খান আর বুবলীকে নিয়ে একই ধরনের কথা রটছে চলচ্চিত্রপাড়ায়। শুটিংয়ের ফাঁকে এই দুজন শিল্পী নিজেদের মতো করে পছন্দের জায়গায় বেড়াতে যান। সময় কাটান একান্তে। বুবলী অবশ্য শাকিব খানের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারটিকে এভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, ‘সহশিল্পীদের সবার সঙ্গে সবার ভালো বোঝাপড়া থাকে, যেটা আমার সঙ্গে শাকিবের আছে এবং থাকবে। তাঁকে অনেক শ্রদ্ধা করি, যেটা এক দিনে তৈরি হয় না যে এক দিনে কমে যাবে। কারণ, শাকিব খান আমাদের গর্ব এবং সব সময়ই থাকবেন।’