সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের অন্যতম নেতা রাশেদ খানকে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
আদালতের এ রায়ের পর রাশেদ খাঁনের মা সালেহা বেগম বলেন, ‘শনিবার ছাত্রলীগের ১৫-২০ জন নেতা বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে এসেছে। আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে ছেলেকে লেখাপড়া শিখিয়েছি। আমার সেই ছেলে এখন জেলে। ও ছাড়া পেলে বাড়ি নিয়ে যাব। আমার আর চাকরির দরকার নেই।’
সোমবার আদালতের রায়ের পর তার মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে আদালত প্রাঙ্গণে এসব কথা বলেন। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত ছিলেন রাশেদের খাঁনের বাবা নবাই বিশ্বাস, বোন সোনিয়া ও রূপালি এবং স্ত্রী রাবেয়া আলো।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ’ ব্যানারে কয়েক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছে একদল শিক্ষার্থী। তাদের আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ‘ঘোষণা’ দিলেও সরকারি প্রজ্ঞাপন না আসা পর্যন্ত নানা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।
এই পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের বিরুদ্ধে গত শনিবার রাতে একটি মামলা করেন ছাত্রলীগের সাবেক আইন বিষয়ক সম্পাদক আল নাহিয়ান খান জয়। পরে রোববার রাজধানীর মিরপুর থেকে তাঁকে আটক করে ডিবি পুলিশ।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা ওই মামলায় প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তি এবং ফেইসবুক ব্যবহার করে শিক্ষাঙ্গনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শাহবাগ থানার এসআই সজীবুজ্জামান গতকাল সোমবার রাশেদকে ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে দশদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন।
আদালতে রাশেদের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। এ সময় রাশেদ খান নিজেই আদালতকে বলেন, ‘এ আন্দোলন আমার একার নয়। এটা সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলন। আন্দোলনে নামার পর সরকারের পক্ষ থেকে তিনবার আমাদের সঙ্গে বসা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৪ মে আলোচনা হয়েছে।’
একপর্যায়ে বিচারক বলেন, ‘আপনাদের ধৈর্য ধরতে হবে। নেতা হতে হলে তো ধৈর্য ধরতে হবে।’
আইনজীবী জাইদুর রহমান ও মো. নুরুজ্জামান শুনানিতে বলেন, ‘আসামি কোনো অন্যায় করেননি। মামলায় মানহানির অভিযোগের বিষয়ে রিমান্ডে নেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।’
বিচারক বলেন, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার মানে তদন্ত কর্মকর্তাকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। এরপর তিনি পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
সূত্র: সময়ের কণ্ঠস্বর