বাংলাদেশে কেন এত আলোচিত কুসুম সিকদারে মিউজিক ভিডিও ‘নেশা’, কি আছে এতে?

সম্প্রীতি বাংলাদেশে একটি মিউজিক ভিডিও নিয়ে মিডিয়া মহলে তোড়পাড় শুরু হয়েছে। এমনকি সংবাদপত্র গুলোতেও ব্যাপক লেখালেখি হচ্ছে। ইউটিউবে ভিডিওটির প্রকাশের ১০ দিনে পরই আইনি নোটিশ পেয়েছে সম্প্রচারকারীরা। নোটিশের শর্ত ছিল ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সরিয়ে নিতে হবে ভিডিওটি না হলে যেতে হবে জেলে। গানটিতে মডেল হয়েছে বাংলাদেশের আলোচিত মডেল ও অভিনেত্রী কুসুম সিকদার।

গত রবিবার গানের মডেল কুসুম সিকদার এবং খালেদ হোসাইন সুজন ঢাকার সুপ্রিম কোর্ট থেকে আইনি নোটিশ পেয়েছেন। আইনজীবী আফতাব উদ্দিন সিদ্দিকী রাগিব নোটিশটি পাঠিয়েছেন। কুসুমকে তো আমরা সবাই চিনি। তিনি মিডিয়ার সাথে অনেকদিন থেকেই জড়িত। ছোট পর্দা বড় পর্দাতে সমানভাবে পরিচিত। বিজ্ঞাপনচিত্রে ও অভিনয় করেছেন প্রচুর। তাহলে কেনই বা তাকে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হল? সুপ্রিম কোর্ট কেন আইনি নোটিশ জারি করল?

সুপ্রিম কোর্টের নোটিশে জানানো হয়েছে, মিউজিক ভিডিও ‘নেশা’ শুরুই হয় আপত্তিকর, যৌন উত্তেজক ও অশ্লীল দৃশ্য দিয়ে। মিউজিক ভিডিওর গানটির কথাগুলো যৌন উত্তেজক ও অশ্লীলতা পূর্ণ। ”চোখে আমার তোমার নেশা, শ্বাসে আমার তোমার নেশা, সারা দেহে তোমার নেশা, রগে রগে তোমার নেশা, তোমায় পান করে জ্ঞান হারাই, হই মাতাল’’ এ ধরনের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তাই ভর্তি। তাছাড়া ছোটো বড় সব বয়সের মানুষ এখন বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে টিভির চেয়ে ইউটিউব ভিডিওতে বেশি আসক্ত। এইসব কুরুচিপূর্ণ ভিডিও তরুণ সমাজকে বিপথগামী করে। তাই গানটির ভিডিও এবং টিজার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইউটিউব থেকে সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেই সুপ্রিম কোর্ট।

নোটিশে এও বলা হয়েছে, মিউজিক ভিডিওটিতে ৫টি শাওয়ারের দৃশ্য, ৭টি সুইমিং পুলের দৃশ্য, ১টি শয্যাদৃশ্য ও ৩টি চুম্বন দৃশ্য আছে। এগুলো আমাদের কালচারের সাথে যায় না। তাছাড়া গানের কথার সাথে দৃশ্যের কোনও সাদৃশ্য বা সঙ্গতি নেই। এছাড়া বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী অশ্লীল ভিডিও তৈরি ও প্রকাশনা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মধ্যে পড়ে। এবং পর্নোগ্রাফি আইন, ২০১২ এর ৮ ধারামতে তা দণ্ডনীয় অপরাধ।

এছাড়া বিটিআরসি চেয়ারম্যান, তথ্য ও যোগাযোগ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সচিব, তথ্যসচিবকেও নোটিশ আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলেও শোনা গেছে। এই নোটিশে বলা হয়েছে ইউটিউব ও অনলাইনে মিউজিক ভিডিও’র নামে অশ্লীল ভিডিও তৈরি ও প্রকাশনা বন্ধ করতে হবে । এবং মনিটরিং করতে হবে। সাথে সাথে আগামী এক মাসের মধ্যে বিভিন্ন অনলাইন চ্যানেলে থেকে এমন ভিডিওগুলো সরানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

কুসুম সিকদারের মিউজিক ভিডিও ‘নেশা’ চলতি মাসের ৩ তারিখে ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়। কিন্তু প্রকাশের পর থেকেই ভিডিওটি নিয়ে গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়াতে শুরু হয় সমালোচনার ঝড়। অবশেষে তা গড়ালো সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। কোর্টের আইনজীবী আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী রাগিব বলেন , ‘‘ আমরা নোটিশ পাঠিয়েছি, অপেক্ষা করছি, যদি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভিডিওটি না সরান হয় তবে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’’

এ বছরের মে মাসে নুসরাত ফারিয়ার ‘বস টু’ সিনেমার ‘আল্লাহ মেহেরবান’ আইটেম গান প্রকাশের পর রোজার মাসে খোলামেলা পোশাক পড়ে অশ্লীল নাচের সাথে আল্লাহ নাম ব্যবহারের অভিযোগে আইনি নোটিশ পায়। এবং পরবর্তীতে গানটির কথা বদল করা হয়েছিল।