যেসব ভুলের কারণে নকআউট পর্বে যেতে পারেনি জার্মানি

চারবছর আগে জার্মানিকে বিশ্বকাপ জেতানো কোচ জোয়াকিম লো’র এবারের বিশ্বকাপের দল বাছাই নিয়েই সমালোচনা তৈরি হয় আসর শুরুর আগে। আর আসরে গ্রুপপর্ব থেকে বাদ হওয়ার পর নিশ্চিতভাবে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়বেন তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ি, বিশ্বকাপ স্কোয়াডে ২২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড লিরয় সেইনকে রাখেননি তিনি। গত মৌসুমে এই ফরোয়ার্ড ম্যানচেস্টার সিটি’র প্রিমিয়ার লিগ বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল দেয়া মারিও গোয়েৎজেকেও দলে রাখেননি তিনি। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে পাঁচটি পরিবর্তন নিয়ে একাদশ সাজান লো। থমাস মুলারকে বসিয়ে মেসুত ওজিলকে খেলালেও আর্সেনাল মিডফিল্ডার দলকে জয় এনে দিতে পারেননি।

২০০৬ থেকে জার্মানির দায়িত্বে থাকা লো দলকে ২০০৮ এর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিয়ে যান। তার অধীনেই পরবর্তীতে বিশ্বকাপ জেতে জার্মানরা। তবে লো’র দলের প্রধান কয়েকজন খেলোয়াড়ের ভবিষ্যতে এখন শঙ্কার মুখে।

ম্যানুয়েল ন্যয়ারের বয়স ৩২, স্যামি খেদিরা’র ৩১ আর ওজিল ও মার্কো রয়েসের বয়স ২৯। অর্থাৎ বিশ্বকাপের মূলপর্বে তাদেরকে আর খেলতে না’ও দেখা যেতে পারে। তবে লো বলেছেন জার্মানির ফুটবলে সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই হার কি জার্মান ফুটবলে অন্ধকার অধ্যায় শুরু করবে? আমার মনে হয় না।’

গোলের সুযোগ হাতছাড়া করার মাশুল
গ্রুপ এফ’এর আরেক খেলায় যখন মেক্সিকোর বিপক্ষে ৩-০ গোলে জিতছিলো সুইডেন, তখন দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে গোল দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল জার্মানি। জার্মানি জিতলে গোল ব্যবধানে মেক্সিকোর বাদ পড়তো বিশ্বকাপ থেকে। কিন্তু তখন উল্টো গোল করে বসে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে কিমের গোল শুরুতে অফসাইডের কারণে বাতিল করে দেয়া হয়।

তবে ভিডিও রিভিউ করে দেখা যায় জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের গায়ে লেগে কিমের কাছে বল আসে। কাজেই বাতিল করে দেয়া হয় অফসাইডের সিদ্ধান্ত আর এগিয়ে যায় দক্ষিণ কোরিয়া। ম্যাচে ফেরার জন্য মরিয়া জার্মানদের হয়ে আক্রমণে যোগ দেন গোলরক্ষক ন্যয়ারও। আর সেই সুযোগটাই কাজে লাগান টটেনহাম ফরোয়ার্ড সন হিউং-মিন। আক্রমণভাগে থাকা ন্যয়ারের অনুপস্থিতির সুযোগে খালি পোস্টে গোল করে নিশ্চিত করেন ২-০ গোলের জয়।

দুই গোল খেলেও ম্যাচে জার্মানির হতাশা হয়ে থাকবে কয়েকটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করা। লিয়ন গোরেৎজকার একটি হেড দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক চো হিয়েওন-উ। সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেন টিমো উইনারও। প্রায় ১২ গজ দূর থেকে পোস্টের বাইরে শট নেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়া দুই গোল দেয়ার আগে একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন ম্যাটস হামেলসও। ছয় গজ দূর থেকে নেয়া তার হেড চলে যায় পোস্টের উপর দিয়ে। এই হারের সাথে হতাশাজনক ভাবে শেষ হলো জার্মানির টানা দুই বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন।