শরীরেকে সুস্থ রাখতে যে খাবারটির কোনও বিকল্প নেই বললেই চলে, সেটি হল দুধ। একাধিক গবেষণা একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে ছেড়েছে যে নিয়মিত এক গ্লাস করে দুধ খেলে শরীরে এত মাত্রায় পুষ্টিকর উপাদানের প্রবেশ ঘটে যে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। কিন্তু জানেন কি ত্বকের কতটা উপকারে লাগে এই পানীয়টি?
বেশ কিছু স্টাডি অনুসারে নিয়মিত দুধের সর মুখে লাগালে বা দুধ দিয়ে মুখ ধুলে অপূর্ব সুন্দরি হয়ে উঠতে সময়ই লাগে না। আর একথার প্রমাণ পাওয়া যায় ক্লিয়োপেট্রাকে দেখলেই। ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানতে পারা যায় দুধের সর দিয়ে নিয়মিত ত্বকের পরিচর্যা করতেন মিশরের মহারানী। তাই তো তিনি এত সুন্দরি হয়ে উঠেছিলেন। এবার বলুন, আপনি কি চান ক্লিয়োপেট্রার মতো সুন্দরি হয়ে উঠতে? তাহলে বন্ধু, ত্বকের পরিচর্যায় নিয়মিত দুধের সরকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন।
প্রসঙ্গত, নিয়মিত দুধের সর মুখে লাগালে যে যে উপকার পাওয়া যায়, সেগুলি হল…
১. ত্বক ফর্সা হয়ে ওঠে:
অল্প দিনে ত্বককে উজ্জ্বল এবং ফর্সা করে তুলতে চান? তাহলে বন্ধু দুধের সরকে কাজে লাগাতেই হবে! আর যদি এমনটা করতে না পারেন, তাহলে কাঁচা দুধও মুখে লাগাতে পারেন। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ দুধ নিয়ে ভাল করে মুখে লাগিয়ে ফেলুন। ১০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন মুখটা। এমনটা নিয়মিত করতে পারলে ফর্সা ত্বকের অধিকারি হয়ে উঠতে দেখবেন সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, ত্বককে ফর্সা করে তুলতে আরেকভাবেও দুধকে কাজে লাগানো যেতে পারে। কীভাবে? ২ চামচ দুধের সঙ্গে ১ চামচ মধু, ১ চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। তারপর সেই মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। সময় হয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন মুখটা।
২. ত্বককে পরিষ্কার করে:
সারা দিন ধরে নানাবিধ দূষিত পদার্থ এবং ধূলো-বালি আমাদের ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। তাই তো দিনের শেষে দুধকে কাজে লাগিয়ে ত্বকের পরিচর্যা করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। আসলে এমনটা করলে স্কিনের অন্দরে লুকিয়ে থাকে ক্ষতিকর উপাদানেরা বেরিয়ে যায়। ফলে ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটতে সময় লাগে না। এক্ষেত্রে একটা বাটিতে অল্প পরিমাণে দুধ নিয়ে একটা তুলোর সাহায্যে সেই দুধটা ভাল করে মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করতে হবে। ৫-১০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে মুখটা। এইভাবে প্রতিদিন ত্বকের পরিচর্যা করলে ত্বক ভেতর এবং বাইরে থেকে পরিষ্কার হয়ে উঠবে। ফলে সৌন্দর্য বাড়তে সময় লাগবে না। প্রসঙ্গত, দুধের সঙ্গে দু টুকরো পেঁপে মিশিয়ে সেই মিশ্রনটি যদি মুখে লাগাতে পারেন, তাহলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যায়।
৩. ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে:
ত্বকের সৌন্দর্য এবং উজ্জ্বলতা বাড়াতে দুধের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। এক্ষেত্রে ২ চামচ দুধের সঙ্গে ১ চামচ মধু এবং অল্প পরিমাণে গরম জল মিশিয়ে একটা পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। তারপর সেই পেস্টটা মুখে এবং গলায় লাগিয়ে কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। যখন দেখবেন পেস্টটা একেবারে শুকিয়ে গেছে। তখন মুখটা গরম জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রসঙ্গত, নিয়মিত দুধ খাওয়া শুরু করলেও কিন্তু সমান উপকার পাবেন!
৪. ত্বকের প্রদাহ কমায়:
বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে পরিবেশ দূষণ এবং আরও নানা কারণে ত্বকের অন্দরে প্রদাহ সৃষ্টি হয়। ফলে নানাবিধ ত্বকের রোগ মাথা চাড়া দিযে ওঠার আশঙ্কা যায় বেড়ে। এমনটা যাতে অপনার সঙ্গে না ঘটে, তা সুনিশ্চিত করতে ত্বকের পরিচর্যায় কাজে লাগাতে হবে দুধ বা দুধের সরকে। এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ দুধের সর নিয়ে যদি মুখে লাগাতে পারেন, তাহলে নিমেষে প্রদাহ কমে যাবে। ফলে একদিকে যেমন ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে, তেমনি নানাবিধ ত্বকের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে।
৫. মৃত কোষের আবরণ সরিয়ে ফেলে:
কখনও খেয়াল করেছেন, ত্বকের উপরে জমতে থাকা মৃত কোষেদের কারণে ত্বকের সৌন্দর্য কতটা কমে যায়? নিশ্চয় খেয়াল করেন নি তো, করবেনই বা কী করে! কারণ খালি চোখে তো এই সব মৃত কোষেদের দেখা যায় না। তাই সত্যিই যদি অপূর্ব সুন্দরী হয়ে উঠতে চান, তাহলে ত্বকের পরিচর্যায় দুধকে কাজে লাগাতে ভুলবেন না যেন! এক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ জল নিয়ে তাতে পরিমাণ মত নুন ফেলে সেই জলটা ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর তাতে চার কাপ দুধ মিশিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। তারপর সেই মিশ্রনটি মুখে লাগিয়ে ভাল করে মাসাজ করলেই কেল্লাফতে! তাহলেই দেখবেন মৃত কোষের স্তর সরে যাবে। ফলে ত্বক সুন্দর হয়ে উঠবে চোখে পরার মতো।