‘প্লিজ আজ নয় ডার্লিং ভীষণ টায়ার্ড’অন্য একদিন

ফুটবল বিশ্বযুদ্ধ চলছে। নক-আউটের আজ প্রথম রজনী। ঘুম উড়েছে সারাবিশ্বের। দিনভর কর্মব্যস্ততার শেষে ম্যাচ দেখতে মাঝরাতেও টিভিতে চোখ রাখতেই হচ্ছে ফুটবল-পাগল বাঙালিকে। সব খেলার সেরা ফুটবলের জন্য অনেক কিছুই ত্যাগ করা যায়, কিন্তু ‘অন্য’ কিছুর জন্য ফুটবল…ত্যাগ করা যায় না।

মেসি-নেইমারের পায়ের জাদুতে বুঁদ হয়ে থাকতে রাজি ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু রাত জেগে বিশ্বকাপ দেখার ঠ্যালায় পার্টনারের সঙ্গে সেক্স-লাইফে যে তালাচাবি পড়ে গিয়েছে, সে খবর রাখেন? সঙ্গিনীর সঙ্গে শয্যায় সেলিব্রেট করার বদলে বাঙালির পছন্দের তালিকায় শীর্ষে এখন বিশ্বকাপ।

আপনি কখন অফিস থেকে ফিরবেন, রাতে শয্যায় ‘তাঁকে’ একটু আদর করবেন। তার জন্য তো হা-পিত্যেশ করে থাকেন আপনার সঙ্গিনী। কিন্তু মাস-খানেকের ‘কালরাত্রি’ যেন কাটছেই না। ডিনার শেষ। সারাদিন অফিসের পর বিশেষ মুহূর্তে আপনার স্ত্রী পেতে চায় আপনাকে। আপনার এক ডাকের জন্য মুখিয়ে থাকেন। কিন্তু আপনার ধ্যান-জ্ঞান যে আব্দ্ধ ‘ইডিয়ট বক্স’-এ।

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পুরুষরা মনে করেন, ওয়ার্ল্ড কাপ চার বছরে একবার আসে। আর স্ত্রী তো রয়েইছেন। তার জন্য তাড়া কী? ‘ডুরেক্স’ এর এক সমীক্ষা জানাচ্ছে, ফুটবলের বিশ্বযুদ্ধের জন্য একাকীত্বে রাত কাটছে সঙ্গিনীর। বিশ্বকাপ চলার সময় প্রায় ৪০ শতাংশ পুরুষ বিছানার বদলে বেছে নিচ্ছেন বিশ্বকাপকে। আর স্ত্রীয়ের আদুরে ডাককে ফেরাতে বেছে নিচ্ছেন কিছু দুর্বল অজুহাত। কেমন সেই অজুহাত? পুরুষদের ক্ষেত্রে কমন অজুহাত- ‘আজ শরীর খারাপ। মাথায় ব্যথা’। ‘আজ অফিসে খুব কাজের চাপ গিয়েছে, ভীষণ টায়ার্ড’। ‘প্লিজ আজ নয় ডার্লিং।

যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্ত্রীয়ের সতীন করবেন না ফুটবলকে। আপনার সহধর্মিণীকে বরং সত্যিটাই বলুন। বলুন, আজ খেলা দেখব। পারলে তাকেও সঙ্গী করুন খেলা দেখার। বুঝিয়ে দিন ফুটবলের খুঁটিনাটি। চিনিয়ে দিন মুলার-রোবেনদের। বলে দিন ‘ফ্লাইং ডাচ’ কেন বলে ভ্যান পার্সিকে। প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরতদের পক্ষে সময়টা আরও মারাত্মক। একদিকে স্ত্রী বা প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে হবে, খেলাও দেখতে হবে আবার অফিসের চাপও বজায় থাকছে পুরোদমে। তাই অনেকেই মাথায় রাখতে পারছেন না সব একসঙ্গে।

এসময় বউদের একটা বেসিক অভিযোগ ওঠেই, ‘তুমি আমার কোনও কথাই শুনছ না’ বা ‘অকারণে এত খিটখিট করছ কেন?’। অনেক সময় মেজাজ হারাচ্ছেন পুরুষরাও। এতে যৌন-জীবন ক্ষতিগ্রস্ত তো হচ্ছেই, কমছে স্বামী-স্ত্রীয়ের আন্ডারস্ট্যান্ডিংও। চিকিৎসকদের বলছেন, একটানা রাত জেগে খেলা দেখার প্রভাব যৌন-জীবনে পড়তে বাধ্য। মাঝরাতের খেলা শেষ হতে ভোর। তারপরে ঘণ্টা-খানেকের ঘুমের পরেই অফিসের ডাক। কাজের চাপে নাওয়া-খাওয়া শিকেয়। বাড়ি ফিরে ক্লান্তি বোধ করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনার স্ত্রী দিনভর আপনার অপেক্ষা করে থাকে। সমস্যাটা সবচেয়ে প্রকট নিউ এজ কাপলদের মধ্যে। স্বামীর স্পর্শ পাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকলেও মিলছে একাকী শয্যা।

কিন্তু আপনিও বা কী করে খেলা ছেড়ে বিছানায় আসবেন? দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি এড়াতে চিকিৎসকদের পরামর্শ, এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে স্ত্রীকেও। দুজনে একটু গল্প করুন, কথা বলুন। সারাদিন কী হল অল্প কথায় বুঝিয়ে বলুন স্ত্রীকে। তাকে একটু আসান। তারপরে খেলা দেখার অনুমিত চেয়ে নিন। বেডরুমে টিভি থাকলে আওয়াজ অল্প করে শুনুন। এই সময় ড্রিংক তো একদমই নয়। আর এক কাজ করুন।

কোন কোন খেলা না দেখলেই নয় তার একটা চার্ট বানিয়ে নিন। বউয়ের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলুন। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-জার্মানির খেলা ছাড়া যাবে না এ কথা জানিয়ে দিন বউকে। আর সপ্তাহের অন্তত দুটো রাত রাখুন বউয়ের জন্য। তাহলেই দেখবেন আপনার বউও ঐশ্বর্যের মত বলবে, ‘যো কারে আপনে বিবিসে প্যায়ার, উও ক্যায়সে কারে মোহাব্বাত সে ইনকার।