ঈর্ষা দূর করার উপায়

মনোবিদ্যা অনুযায়ী, এক ধরনের অনুভূতিজনিত আঘাত থেকে মানুষ ঈর্ষা করতে শুরু করেন এবং তার মূলে থাকে নিজের কোনো কমতি বা দুর্বল দিক। অন্য কেউ ‘আমার চেয়ে ভাল’ এই ভাবনাই মানুষের মধ্যে ঈর্ষা তৈরি হওয়ার প্রাথমিক শর্ত।

গবেষকদের মতে, ঈর্ষান্বিত ব্যক্তিরা প্রথমে ক্রোধ অনুভব করেন এবং পরবর্তীতে এই ক্রোধ হীনমন্যতার জন্ম দেয়। এতে করে মানসিক শান্তি নষ্ট হয় ও আত্মবিশ্বাসের উপর প্রভাব পড়ে যা জীবনের লক্ষ্যকে নষ্ট করে দিতে পারে মুহূর্তের মধ্যেই।

তবে কিছু কৌশল অবলম্বন করলে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় নিজের ভাবনা বা অনুভূতিকে।

১. নিজেকে বোঝান আপনাকে ঈর্ষা নামক অনুভূতি থেকে মুক্ত থাকতে হবে : মানুষ চাইলে পারে না এমন কাজ কমই আছে। বিশেষ করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা কিন্তু আমাদের হাতেই দিয়ে দিয়েছেন। ঈর্ষা করে যে লাভ নেই তা নিজেকে বোঝান। বরং নিজেকে করে তুলুন ঈর্ষনীয়।

২. নিজেকে মনে করিয়ে দিন ঈর্ষান্বিত হওয়ার ক্ষতিকর দিকগুলো : ঈর্ষান্বিত বোধ করলে আপনার কি কি ক্ষতি হতে পারে তা মনে করিয়ে দিন নিজেকে। আপনার সামান্য ঈর্ষাবোধ আপনার মধ্যে হীনমন্যতা, বিষণ্ণতা, রাগ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করে যা আপনার মন ও স্বাস্থ্যের জন্য একেবারেই ঠিক নয়। তাই ঈর্ষা করা নিজের ক্ষতি তা নিজেকেই মনে করিয়ে দিন।

৩. অল্পটা নয় পুরো ছবিটা দেখার চেষ্টা করুন : কারো উন্নতি এবং সফল জীবন দেখলে যদি ঈর্ষা মনে বাসা বাঁধতে থাকে তাহলে শুধু এই বিষয়টি দেখেই থেমে থাকবেন না। দেখুন তার উন্নতি এবং সফল জীবনের পেছনের কাহিনী। তিনি কতোটা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আজকের সফল জীবন পেয়েছেন তার পুরো ছবিটা জানার চেষ্টা করুন। দেখবেন মনের ঈর্ষাটি আপনাআপনিই কেটে যাচ্ছে।

৪. খুব বিশ্বস্ত কারো সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন : ‘ঈর্ষা, হিংসা বা রাগ ধরণের অনুভূতি যদি তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় তাহলে সেটি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয়’, বলেন স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির প্রোফেসর ডঃ কেইথ হ্যামফ্রেস। তাই নিজের অনুভূতির কথা কারো সাথে শেয়ার করে নিজের মানসিক অবস্থার প্রেক্ষিতে পরামর্শ নিন। নিজেকে বুঝে উঠার চেষ্টা করুন।

৫. আপনার মধ্যে কেন এই ধরণের অনুভূতি হচ্ছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন : কারো উন্নতি বা কারো সুখের জীবন দেখে ঈর্ষা বোধ করেন? তাহলে আগে নিজে বোঝার চেষ্টা করুন কেন এমনটি হচ্ছে। আপনার কোন ধরণের কমতির জন্য আপনি ঈর্ষান্বিত বোধ করছেন। নিজের অপূর্ণতা খুঁজে বের করে তা মেটানোর চেষ্টা করুন। এবং নিজের অপূর্ণতার জন্য হীনমন্যতায় না ভুগে আত্মবিশ্বাসের সাথে তা পূরণের চেষ্টা করুন।