মুন্সীগঞ্জ শ্রীনগরে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বাড়িঘর-ভাংচুর চলানোর পর থেকে ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এক অসহায় পরিবার।
এ বিষয়ে শ্লীলতাহানি শিকার সুমাইয়া আক্তার জানন, ‘আমি নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী ৩ কি: মি: দূর আমার স্কুলে প্রতিদিন হেটে যাই যাওয়া আসার সময় পলাশ নামের একই এলাকার একটি ছেলে আমাকে ডিস্টার্ব করতো। মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দিত, নানান ভাবে উত্যাক্ত করতো, আমি মায়ের কাছে এসে বলতাম মা আমাকে একটু সাবধানে থাকতে বলতো। আবার আমাকে পলাশ প্রয়ই সময় বলতো চেয়ারম্যান তরে যাইতে কইছে ডেরার মধ্যে তর লেইগা একটা পার্টি আছে ঐ যায়গায় যাওয়ার জন্য সব সময় বলতো ডেরায় তর যাইতেই হইবো চেয়ারম্যান তরে যাইতে কইছে।’
মেয়েটি আরও জানায়, ‘আমি যামু না আমি চেয়ারম্যানকে চিনি না আমি যামু কেন পলাশ বলে তুই যদি না যাস তাহলে তর মুখে এসিড দিয়া পুড়াইয়া দিব। এমুন অবস্থা কইরা দিব তর দিকে কেউ ফিরাও তাকাইব না নানান ধরনের হুমকি দেওয়া শুরু করলে। তারপর ঈদের আগে ২৫ রোজায় স্কুল বন্ধ দিয়া দিসে চান রাতে আমার ভাই মেহেদি আনে তারপর আমি পুকুর পাড়ে যাই আমাকে দেখে নিজুম মল্লিক বলে এই পাখিটাকে? এই পাখিটা কই থেকে আইলো ঐদিন পলাশ ওদের সাথে ছিল। তারপর ইফতারের পর আমাদের বাসায় এসে আমাকে আমার নাম ধরে সুমাইয়া সুমাইয়া বলে জোরে জোরে ডাকতে থাকে আমি ভয় পেয়ে যাই আমার আম্মু জানালা খুলে দেখতে যায় কে এই ভাবে মেয়েকে ডাকছে জানালা খুলতে খুলতে ওরা হুড়মুড় করে ঘড়ে ঢুকে যায়। ঢুকেই আমাকে হাত ধরে খাট থেকে নিচে ফেলে দেয় নিজুম মল্লিক তার বুকের মধ্যে নিয়ে আমার বুকের মধ্যে দাগ করে দেয় ও জোর করে নানান ভাবে আমাকে খারাপ কথা বলে আমার জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে তারপর আমার সামনে একটা ছেন ছিল ঐটা হাতেনি তখন তারা একটু চেপে দাঁড়ায়।’
সুমাইয়া আরও বলেন, ‘আমি জানালা দিয়ে পালাতে যাইতাছি তখন ওরা আমার পিছন নেয় দাদীর ঘরে যাই ওরাও দাদীর ঘরে যায় কিন্তু আমি দাদীর এই দরজা দিয়ে ঢুকে পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে একটা পুকুর সাতরিয়ে অন্য যায়গায় আশ্রয় নেই। আমারে না পেয়ে দাদা-দাদীকে মারধর করে। আমার আব্বুর মাথায় পিস্তল ধরে বলে মেয়েকে এনে দে ওরা আমার বাবা-মাকে মারধর করে রাতেই শ্রীনগর থানায় যায়। ওনারা কি করছে আমি জানি না আমি তারপর দিন ঈদের দিন থানায় যাই কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। তারপর ওরা জেনে যায় আমরা থানায় গেছি নিজুম মল্লিক, পলাশ, রকি, বজলু, ফারুক চেয়ারম্যানের ভাই যারা ছিল ওরা সবাই মিলে আমাদের বাড়িতে ভাংচুর চালায় ঘরের মধ্যে যা ছিল সব নিয়া গেছে ও পুকুরে ফেলে দেয়। আরো বলে গেছে আগুন লাগলে যেমন এক কাপড়ে বাসা থেকে বের হয় তেমন ওদের এক কাপড়ে এলাকা ছাড়া কইরা দিমু। আমার পড়ালেখা করার অনেক শখ ওদের অত্যাচারে আমার অনেক জায়গায় লেখাপড়া করতে হয়েছে আমি এই ঘটনার বিচার চাই।’
৮ম শ্রেণির ছাত্রী কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ও থানায় অভিযোগ করতে গেলে উপজেলার তন্তর ইউপি চেয়ারম্যান জাকিরের নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কায়দায় বাড়ি ঘর ভাংচুরের ঘটনার প্রায় ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে এখন পর্যন্ত বাদীর অভিযোগটি আমলে নেননি থানা পুলিশ। ভূক্তভোগী অসহায় পরিবারের সদস্য আলী হোসেন এর মেয়ে ৮ম শ্রেনির ছাত্রী সুমাইয়াকে কু-প্রস্তাব দেয় ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেনর ভাই মিনার। ছাত্রী সুমাইয়া কু-প্রস্তাবের বিষয়টি তার বাবা-মার কাছে জানায়। সুমাইয়ার বাবা আলী হোসেন ঈদের দিন শ্রীনগর থানায় একটি অভিযোগ করেন। ইউপি চেয়ারম্যান জাকিরের ভাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করাতে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যান জাকিরের নেতৃত্বে তার ভাই পলাশ, নিজু মল্লিন, ফারুকসহ প্রায় ৫০/৬০ জনের একটি সংঘবদ্ধদল সন্ত্রাসী কায়দায় আলী হোসেনের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। ঘরের ভিতরে থাকা ফ্রিজ, হাড়ি-পাতিলসহ বিভিন্ন আসবাব পত্র পুকুরে ফেলে দেয়। যেকোন সময় পূণরায় সন্ত্রাসী বাহিনী অসহায় পরিবারের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালাতে পারে এমন ভয়ে পরিবারটি নিকট আত্মীয়সহ বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ঘর-বাড়ি ছাড়া অসহায় পরিবারের ফুলমালা বেগম বলেন, আমার এক ছেলে ফাহাদ ও মেয়ে সুমাইয়া নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে এবং আরেক ছেলে আহাদ ৭ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করছেন। সন্ত্রাসী হামলার ভয়ে তারা স্কুলে যেতে পারছে না। প্রতিমুহুর্ত আতঙ্কে দিন পার করছেন বাড়ি ঘর ছাড়া অসহায় পরিবারটি।
বাদীর অভিযোগ বিষয়ে মোবাইল ফোনে শ্রীনগরে থানার অফিসার ইনচার্জ এস এম আলমগীর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে, তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করে বলেন, আমি ব্যস্ত একটু পরে ফোন দেই এইভাবে সময় নেন। পরবর্তিতে আবারও মোবাইল করলে তিনি কিছইু জানেন না বলে উল্টো চেয়ারম্যানের সাফাই গান।
বিডি২৪লাইভ