বাংলাদেশে বিশ্বকাপের জোয়ার

২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ ফুটবল। দেখতে দেখতে চার বছর চলে গেল। এবার ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপ ফুটবল। ১৪ জুন বিশ্বকাপ ফুটবলের উদ্বোধন রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে। উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হবে রাশিয়া এবং সৌদি আরব। আট গ্রুপে ৩২ দেশের লড়াই ফাইনালের মঞ্চে শেষ হবে ১৫ জুলাই।

ফুটবল দুনিয়ায় এরই মধ্যে বিশ্বকাপের ঘ্রাণ ছড়াতে শুরু করেছে। সেই সুদূর হতে বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ফুটবলের সৌরভ আসছে। বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই শিহরণ জাগানো এক অনুভূতি। যার সঙ্গে আর কোনো তুলনা হয় না। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে খেলে না। তারপরও এদেশে যেভাবে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে মেতে উঠে তা অন্য কোথাও কল্পনাও করা যায় না। বাংলাদেশ বিশ্বকাপে না খেললেও এদেশের মানুষের কাছে বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি আছে। সাবেক ফুটবলার বর্তমান ফুটবলার সবাই তার প্রিয় দল নিয়ে কথার যুদ্ধ করে।

জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার শেখ মোঃ আসলাম। তিনি ব্রাজিলের সমর্থক। তার পুরো পরিবারই ব্রাজিলের সমর্থক। কারণ একটাই, পেলে। ফুটবলের কালোমানিক পেলে যে আসলামের পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আসলামের মতে পেলের খেলার সঙ্গে অন্যদের খেলার তুলনা হয় না। পেলের সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে বিশ্বকাপের এতটা প্রচার ছিল না। রেকর্ডকৃত খেলা দেখতে হতো। আসলাম জানালেন রেকর্ডের খেলা দেখার জন্য তারা অপেক্ষা করতেন। আসলাম বিশ্বকাপ নিয়ে জানালেন অন্তত আর যাই হোক জার্মানির কাছে যেভাবে ৭-১ গোলে ব্রাজিল হেরেছিল এবার সেটা হবে না।

কি হবে কি হবে না তা নিয়ে ভাবছেন না জাতীয় ফুটবল দলের আরেক সাবেক তারকা ইলিয়াস হোসেন। আসলামের মতো তিনিও পেলের জন্য ব্রাজিলের সমর্থক। ইলিয়াস জানালেন শুধু পেলে নয় সক্রেটিস, জিকো ছিল আকর্ষণের অন্যতম বড় উপলক্ষ্য। ইলিয়াস আক্রমণ ভাগে খেলতেন সক্রেটিসও খেলতেন। অনুসরণ করতেন সক্রেটিসকে। ইলিয়াস বললেন, ‘ছোটবেলা হতে ব্রাজিলের খেলা দেখি। ব্রাজিল ছাড়া আর কাকে সমর্থন করব।’ বিশ্বকাপের খেলা দেখতে রাশিয়া যাচ্ছেন ইলিয়াস। উদ্বোধনী ম্যাচ, আর্জেন্টিনা ও আইসল্যান্ড এবং ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ড ম্যাচ দেখবেন।

ইলিয়াসের মতো ছোটবেলা হতে আর্জেন্টিনার সমর্থন করেন ইমতিয়াজ আহমেদ নকিব। পেলের কথা মুখেই তুললেন না নকিব। কি কারণে সেটাও বুঝা গেল না। নকিবের মুখে দিয়েগো ম্যারাডোনা ছাড়া আর কেউ নেই। নকিব বললেন, ‘আমি যখন ফুটবল খেলতাম তখন ম্যারাডোনা ফুটবল খেলে। তাকে দেখে আলাদা একটা অনুভূতি থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক।’ ম্যারাডোনা ছাড়া নকিবের প্রিয় খেলোয়াড় মেসি। কিন্তু মেসি একাই আর্জেন্টিনাকে ট্রফি দিতে পারবেন না, এমন আশঙ্কা নকিবের। নকিব বললেন, ‘একা নকিবের পক্ষে বিশ্বকাপ জয় করা সম্ভব না।’ নকিব রাশিয়া যাবেন আর্জেন্টিনা ও নাইজেরিয়া ম্যাচ দেখতে।

নকিবের মতো জাতীয় দলের ফুটবলার মামুনুল ইসলামও আর্জেন্টিনার সমর্থক। তিনিও ছোটবেলা হতে আর্জেন্টিনার প্রতি ভালোবাসা দিয়ে এসেছেন। ম্যারাডোনার খেলা খুব একটা দেখতে পারেননি। তারপরও ম্যারাডোনার জন্য নিজেকে উজাড় করে দিতে চান মামুনুল। তিনি বলেন, ‘ম্যারাডোনার খেলাটা আমার ভালো লাগে। ভালো লাগত বাতিস্তুতার খেলা। রিকোয়েলমের খেলা। সেই ধারাবাহিকতায় এখন মেসির খেলা ভালো লাগে।’ মামুনুলের আফসোস বিশ্বকাপের খেলা দেখতে যেতে পারছেন না। ফুটবল ক্যাম্পে আছেন এখন। সামনে দেশের খেলা। দেশকে একটা ট্রফি দিতে চান । সেই স্বপ্ন বুকে লালন করে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

জাতীয় দলের ক্যাম্প চলছে বিকেএসপিতে। ক্যাম্পে থাকা ফুটবলাররাও এরই মধ্যে বিশ্বকাপ জ্বরে ভুগছেন। ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরবেন। তবে ছুটিতে খেলা নিয়ে মেতে থাকবেন মামুনুল, আশরাফুল রানা, ওয়ালী ফয়সালরা।