নববর্ষ ও ঈদ উৎসবসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় বাংলাদেশের সংস্কৃতির অংশ। রাজনীতিতেও মত-পথের পার্থক্য থাকলেও এসব পার্বণ এলে একে অপরকে কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানান বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিবারই দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রধানদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ঈদ কার্ড আদান-প্রদানের মাধ্যমে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্ড পাঠানোর তালিকায় থাকেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিরোধী দলীয় প্রধান রওশন এরশাদসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতা। আগের মতো এবারও রাজনৈতিক দলের প্রধানদের কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শেখ হাসিনা। তবে ব্যত্যয় ঘটেছে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে। দেশের প্রচলিত আইনে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারান্তরীণ খালেদা জিয়াকে ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানাননি প্রধানমন্ত্রী।
গণভবন ও আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, আগের বছরগুলোতে বিরোধী দলীয় নেতা বা রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে খালেদা জিয়াকে কার্ড পাঠানো হলেও এবার তাকে এর কোনও পর্যায়েই গণ্য করা হয়নি। দেশের আইনে সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিবেচনায় এবার কার্ড প্রদানের তালিকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাম রাখা হয়নি।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে এবার ঈদ শুভেচ্ছা না জানানোর অন্যতম কারণ হলো তিনি এখন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। প্রধানমন্ত্রী কোনও সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ঈদ কার্ড পাঠাতে পারেন না। পাঠালে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা থাকে না। খালেদা জিয়া রাজনীতিক দলের প্রধান হলেও আইনত তিনি এখন অপরাধী।
কার্ড বিতরণের দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রীর একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলের প্রধানদের কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা কার্ড এরই মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠানো হয়নি।’
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে ঈদ শুভেচ্ছা জানাননি প্রধানমন্ত্রী। এবারের পরিস্থিতিতে এটা হয় না।’
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘খালেদা জিয়া আইন অনুযায়ী অপরাধী। কোনও অপরাধীকে প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা জানাতে পারেন না।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়া এখন শুধু রাজনৈতিক নেতা নন, তিনি দেশের প্রচলিত আইনে একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। খালেদা জিয়া অর্থ আত্মসাৎ মামলায় দণ্ডিত। একজন অপরাধীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানতে পারেন না প্রধানমন্ত্রী। ফলে শুভেচ্ছা জানানো হয়নি।’