জমি বিক্রি করে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকাটি তৈরি করেন জার্মান সমর্থক আমজাদ হোসেন

পৃথিবীর সবৃহৎ জার্মান পতাকা প্রদর্শন করলেন মাগুরার সেই আমজাদ হোসেন। নিজের জমি বিক্রি করে আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপ উপলক্ষে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পতাকাটি তৈরি করেন জার্মান ফুটবল দলের সমর্থক আমজাদ হোসেন।
মাগুরা নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে এ মঙ্গলবার সকালে পতাকা প্রদর্শন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন জার্মানি দূতাবাসে ডিপ্লোমেট ক্যারেন উইজোরা ও শিক্ষা ও সংস্কৃতি কর্মকর্তা তামারা কবির।

এই প্রদর্শনীতে আরো ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট হাসান সিরাজ সুজা, স্থানীয় চাউলিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হাফিজার রহমান ও জার্মান ফ্যান গ্রুপের সাইফুল ইসলাম কৌশিকসহ বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসী।

অনুষ্ঠানে আমজাদ জানান, ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে তিনি নিজের জমি বিক্রি করে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ জার্মানির পতাকা তৈরি করেছিলেন। সে সময় জার্মানির রাষ্ট্রদূত মাগুরা এসে তাকে সংবর্ধনা দিয়েছিলেন। এবার তার নিজস্ব অর্থ এবং কিছু মানুষের সহযোগিতায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকাটি তৈরি করেছেন। কোনও কিছু পাওয়ার আশায় নয়, শুধু ফুটবলের প্রতি ভালোবাসার জন্যই তিনি এরকম উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, এই পতাকা অভিযান চলবেই। এ বছর বিশ্বকাপে জার্মান চ্যাম্পিয়ন হলে ২০২২ সালের বিশ্বকাপে ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ পতাকা বানাবেন তিনি। যা মাগুরা ভায়না থেকে সীমাখালী পর্যন্ত পথ জুড়ে প্রদর্শীত হবে।

বাংলাদেশে অবস্থিত জার্মান দূতাবাসের কর্মকর্তা ক্যারেন উইজোরা বলেন, ‘আমরা আমজাদের এ উদ্যোগে অভিভূত। এটি এখন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জার্মান পতাকা। তাই পতাকাটি দেখতে আমরা মাগুরায় ছুটে এসেছি। আমরা জানি আমজাদ অনেক কষ্ট করে এটি তৈরি করেছেন। তাই আমাদের কর্তব্য তার পাশে থাকা। আমরা তার পাশে থাকবো এবং আমজাদের জার্মানি সফরের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বিশ্বকাপেও জার্মানি চ্যাম্পিয়ন হবে এবং খুব শিগগিরই বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলবে এ আশাও রাখি।

প্রসঙ্গত, আমজাদ হোসেন মাগুরার সদর উপজেলার ঘোড়ামারা গ্রামের নেহাল উদ্দিন মোল্যার ছেলে। পেশায় একজন সাধারণ কৃষক। ১৯৮৭ সালে তিনি কঠিন রোগে আক্রান্ত হন। সে সময় অনেক রকম চিকিৎসা নিয়েও কোন সুফল পাননি। অবশেষে মাগুরার মনোরঞ্জন কবিরাজ নামের আয়ুর্বেদিক এক চিকিৎসকের পরামর্শে জার্মানের হোমিওপ্যাথিক ওষুধ সেবনের পরই তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

তারপর থেকেই আমজাদ হোসেন জার্মানের প্রতি আসক্ত হয়ে ওঠেন। সে সুত্র ধরেই বিশ্বকাপে জার্মান ফুটবল দলের ভক্ত হয়ে গেছেন তিনি। যার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে আমজাদ হোসেন নিজ খরচে তৈরি করেছেন এই পতাকা।
সূএঃ সময়ের কন্ঠস্বর