‘সঞ্জু’তে নেই সঞ্জয়ের জীবনের যেসব অধ্যায়

সঞ্জয় দত্তের বায়োপিক নিয়ে তুমুল আগ্রহ দর্শকদের মনে। এমনকি সমালোচকরাও বলতে শুরু করেছেন, পরিচালক রাজকুমার হিরানির এই ছবি বলিউড বায়োপিকে ‘গেমচেঞ্জার’ হবে।

এর মাঝেই খবর আসতে শুরু করেছে যে, সঞ্জয় দত্তের জীবনের বহু অংশ কাটছাঁট করতে বাধ্য হয়েছেন পরিচালক। ছবিতে কী কী রয়েছে আর কোনটাই বা বাদ গেল, জেনে নেয়া যাক জি সিনেমার প্রতিবেদন অনুসারে।

বলিউডের ‘ব্যাড বয়’ সঞ্জয় দত্তের বায়োপিক ‘সঞ্জু’। কিন্তু, যতটা রোমাঞ্চকর জীবন, ততটা কি ধরা পড়বে রাজু হিরানির ছবিতে! এই ছবিতে সুনীল দত্তের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন পরেশ রাওয়াল। তার মতে, পরিচালক কোনও ভাবেই ছবিতে সঞ্জয় দত্তকে মানবিক দিক থেকে ধরেননি। জীবনের বিভিন্ন পর্ব সঞ্জয় যেভাবে পার করেছেন, তাই ধরা আছে ছবিতে। এ ছবি কেবলই বাবা-ছেলের গল্প।

১২ মার্চ, ১৯৯৩। মুম্বাই বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়াল সঞ্জয় দত্তের নাম। তত্‍কালীন পুলিশ কমিশনার রাকেশ মারিয়া তাকে সামনে বসিয়ে জেরা করেন। জেরায় সঞ্জয় ভেঙে পড়েন। কেন তিনি এমনটা করলেন, বারবার এই প্রশ্নে মুখ ফসকে সঞ্জয় বলেন, তার গায়ে মুসলমানের রক্ত আছে। সঞ্জয়ের এই উক্তি ‘সেকুলার’ সুনীল দত্তকে সেসময়ে বড় বিপদে ফেলে দিয়েছিল। মহেশ ভাট তখন প্রকাশ্যে বলেছিলেন, মা নার্গিসের প্রভাবে সঞ্জয় কোরআন শরিফের আয়াত করা লকেট পরতেন, পরবর্তীকালে অবশ্য সঞ্জয়কে কপালে লাল তিলক পরা চেহারায় দেখেছেন সকলে। অত্যন্ত সংবেদনশীল অথচ সঞ্জয়ের জীবনের এমন গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হিরানি কতটা কাটছাঁট করেছেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।

ছবি থেকে বাদ গিয়েছেন সঞ্জয়ের প্রেমিকারা। বরাবরই ‘রঙীন জীবন’ সঞ্জু বাবার। ভালবেসে বিয়ে করলেন রিচা শর্মাকে। কন্যা জন্মানোর পর ত্রিশলার চারমাস বয়সে ব্রেন টিউমার ধরা পড়ল রিচার। এরপর সঞ্জয়ের মা নার্গিস নিউ ইয়র্কে যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেখানেই রিচার চিকিত্‍সা করানো হয়। শুটিংয়ের ফাঁকে বারবার স্ত্রীকে দেখতে গেছেন তিনি। অথচ, মুম্বাইয়ে সেই সময়েই তার ও মাধুরী দীক্ষিতের প্রেম নিয়ে প্রায় রোজ খবর লেখা হচ্ছে। এমনকি, মুম্বাই বিস্ফোরণের পর যখন মাধুরী তার সঙ্গে ‘ব্রেক-আপ’ করেন, তখন ‘বাবা’ সুনীল দত্ত প্রকাশ্যে ছেলের দুরবস্থার কথা বলেন। একদিকে অসুস্থ স্ত্রী, যার সঙ্গে সঞ্জয়ের কেবল দায়িত্বের সম্পর্ক, অন্যদিকে বিখ্যাত নায়িকা, যাকে সঞ্জয় ভালবাসেন অথচ তিনি দূরে সরে যেতে চান। শোনা যাচ্ছে, মাধুরী দীক্ষিতের অনুরোধে এই গোটা পর্বটাই নাকি ছবি থেকে বাদ দিয়েছেন পরিচালক।

এমনকি, একই কারণে সম্ভবত বাদ গিয়েছে টিনা মুনিমের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার পর্বও। কারণ, টিনার সঙ্গে ব্রেক আপের পরেই নিজের ঘরে বসে নেশার ঘোরে বন্দুক চালাতে শুরু করেন সঞ্জয়। চতুর্দিকে কাঁচ ভাঙতে থাকে আর পাড়াপড়শিরা ভয় পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। সেই থেকেই সঞ্জয়ের বন্দুকের লাইসেন্স নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। শোনা যাচ্ছে, আম্বানি পরিবারের আপত্তিতে পরিচালক রাজকুমার হিরানি তাদের আশ্বস্ত করেছেন।

যদিও মান্যতার সঙ্গে তার প্রেম, বিয়ে, বোনেদের সঙ্গে বিরোধ, সন্তান এসবই থাকছে ছবি জুড়ে।