স্বপ্নদলের ‘চিত্রাঙ্গদা’র মঞ্চায়ন

নাট্য সংগঠন স্বপ্নদলের দেশ-বিদেশে প্রশংসিত প্রযোজনা ‘চিত্রাঙ্গদা’র সফল প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ১ জুন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরায়ত সৃষ্টি চিত্রাঙ্গদার গবেষণাগার নাট্যরীতিতে নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। এটি ছিল প্রযোজনাটির ৬৮তম মঞ্চায়ন।

রবীন্দ্রনাথ মহাভারতের চিত্রাঙ্গদা উপাখ্যান অবলম্বনে ১৮৯২ সালে কাব্যনাট্যরূপে এবং ১৯৩৬ সালে নৃত্যনাট্যরূপে চিত্রাঙ্গদা রচনা করেন। স্বপ্নদলের চিত্রাঙ্গদা প্রযোজনাটি নির্মিত হয়েছে কাব্যনাট্য পাণ্ডুলিপি অবলম্বনে। এর নাট্যকাহিনিতে উপস্থাপিত হয় মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করে মণিপুর বনে এসেছেন। মণিপুর রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। অপমানিত চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় ১ বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। এবারে অর্জুন যথারীতি চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর দ্বন্দ্বে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকে। অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালোবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে? এভাবে চিত্রাঙ্গদা পৌরাণিক কাহিনির আড়ালে যেন এ কালেরই নর-নারীর মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং পাশাপাশি পারস্পরিক সম্মানাবস্থানের প্রেরণারূপে উপস্থাপিত হয়। চিত্রাঙ্গদা প্রযোজনার গ্রন্থিকরা হলেন সোনালী, জুয়েনা, শিশির, শ্যামল, রানা, জেবু, সুমাইয়া, সামাদ, ঊষা, অর্ক, সম্রাট, আলী, বিপুল, অনিন্দ্য, নিসর্গ, মাসুদ, সুকুমার, বিমল প্রমুখ। প্রসঙ্গত, স্বপ্নদলের চিত্রাঙ্গদা প্রযোজনাটি ২০১১ সালে সার্ধশত রবীন্দ্রবর্ষ উপলক্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুদানে নির্মিত হয়।