সত্য ঘটনানির্ভর সিনেমায় অনবদ্য

সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ‘অ্যাড্রিফট’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে হালে। এ ছবির গল্প দর্শকহূদয়ে স্পর্শ করেছে খুব সহজেই। ‘অ্যাড্রিফট’-এর ঘটনাগুলো গড়ে উঠেছে জীবনকে একটু একটু করে মৃত্যুর ভয়াল থাবা থেকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে। একজন পুরুষ আর একজন নারী—তারা ভালোবাসে পরস্পরকে। কিন্তু নিয়তির খেলায় একসময় তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যায়। গতানুগতিক গল্পের মতো পরিবার, সমাজ কিংবা মানবিক আবেগ তাদের প্রেমের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। কিন্তু মৃত্যু তাদের ভালোবাসার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ভালোবাসার বন্ধনে জড়িয়ে থাকা এই প্রেমিক-প্রেমিকা জুটি সাগরে বেড়াতে গিয়ে প্রচণ্ড ঝড়ের কবলে পড়ে একজন আরেকজনকে হারিয়ে ফেলে। প্রশান্ত মহাসাগরে ধু-ধু জলরাশির মধ্যে অসহায় হয়ে পড়ে তারা। সেখান থেকে উদ্ধার পাওয়ার কোনো উপায় খুঁজে পায় না তারা। জীবন বাঁচাতে মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালায়। তেমনি গল্পের হলিউডি সিনেমা ‘অ্যাড্রিফট’ এরমধ্যে সবার প্রশংসা লাভ করেছে। এ ছবির নায়িকা ‘টামি ওল্ডহাম’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন শেইলিন উডলি। ‘অ্যাড্রিফট’ ছবিতে নায়িকা চরিত্রে নিজের অভিনয় নিয়ে দারুণ উচ্ছ্বাসিত এই অভিনেত্রী। বাস্তব জীবনে ঘটে যাওয়া ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ছবিতে অভিনয়ের সময় মনপ্রাণ উজাড় করে দিয়েছিলেন তিনি। ২৬ বছর বয়সী শেইলিন উডলি বলেন, ‘আমার অভিনয়জীবনে ‘অ্যাড্রিফট’-এর টামি ওল্ডহাম চরিত্রটি যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। একজন প্রেমিকা প্রাকৃতিক প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করে কিভাবে নিজেকে এবং তার ভালোবাসার মানুষটিকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠে, দুঃসাহসী লড়াই আর শেষ পর্যন্ত জীবনের নতুন এক অধ্যায়ে পদার্পণ সবই ফুটিয়ে তুলতে হয়েছে আমাকে। এর আগে অনেক ধরনের চরিত্রে অভিনয় করলেও এ ছবিতে আমি সত্যি সত্যি কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি গল্পের নায়িকা টামির মতোই। আমার অভিনয় নিয়ে সমালোচক-দর্শকদের উচ্ছ্বাসভরা মন্তব্য আমাকে উদ্দীপ্ত করেছে, আমি সত্যি অভিভূত।’ আমেরিকান এই অভিনেত্রীর জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ার সান বারনারডিনো কাউন্টিতে। ওখানকার সিমি ভ্যালিতে বেড়ে উঠেছেন। বাবা-মা দুজনই স্কুল শিক্ষক ছিলেন। ১৫ বছর বয়সে তার স্কোলাইওসিস রোগ ধরা পড়ে। তার মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যাচ্ছিল এ রোগের কারণে। বুক থেকে কোমর পর্যন্ত প্লাস্টিকের তৈরি এক ধরনের বন্ধনী পরে থাকতে হতো তাকে মেরুদণ্ড বাঁকা হওয়া ঠেকাতে। মাত্র চার বছর বয়স থেকে মডেলিংয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন উডলি। অভিনয় শেখার ক্লাসে অংশ নেওয়া শুরু করেছিলেন সিমি ভ্যালি হাইস্কুলে পড়ার সময় থেকে। ২০০১ সালে টেলিভিশনে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল। বিভিন্ন টিভি সিরিজে অভিনয় করে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি হলো টেলিভিশন ফিল্ম ‘ফেলিসিটি :অ্যান আমেরিকান গার্ল অ্যাডভেঞ্চার’। যেখানে তিনি ফেলিসিটি মেরিম্যান চরিত্রে অভিনয় করেন। এছাড়াও টিভি সিরিজ ‘এভারবডি লাভস রেমন্ড মাই নেস ইজ আর্ল’, ‘সিএসআই :এনওয়াই’, ‘ক্লোজ টু হোম’, ‘কোল্ড বস’ প্রভৃতি তার উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০১১ সালে বড় পর্দায় শেইলিন উডলির অভিষেক হয়েছিল ‘দ্য ডিসেডেন্টস’ ছবির মাধ্যমে। যেখানে জর্জ ক্লুনির কন্যার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তিনি। ওই ছবিতে তার অভিনয় বিপুল প্রশংসা অর্জন করে। সুন্দরী অভিনেত্রী হিসেবেও তার নাম ডাক ছড়িয়ে পড়েছিল। এরপর ‘দ্য স্পেক্টাকুলার নাউ’ ছবিতে অভিনয় করে বেশ কিছু পুরস্কার নিজের ঝুলিতে পুরতে সক্ষম হন। তার অভিনীত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘হোয়াইট বার্ড ইন অ্যা ব্লিজারড’, ‘ডাইভারজেন্ট’, ‘দ্য ফল্ট ইন আওয়ার স্টারস’, ‘দ্য অ্যামাজিং স্পাইডারম্যান টু’, ‘নাইন কিসেস’, ‘দ্য ডাইভারজেস্ট সিরিজ :ইন সার্জেন্ট’, ‘দ্য ডাইভারজেন্ট সিরিজ :অ্যালিজিয়ান্ট’, ‘স্নোডেন’ প্রভৃতি। অভিনীত ছবিগুলোর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে দর্শক মনে ঝড় তোলা ‘অ্যাড্রিফট’ ছবিটিকে এগিয়ে রাখতে চান হলিউডের অভিনেত্রী শেইলিন উডলি।