আমি আর পারছি না মা আমাকে বাচাও ওরা আজ আমাকে….

আমাকে বাচাও ওরা আজ আমাকে মেরে ফেলবে। আমি হাটতে চলতে পারছিনা। আমাকে লাঠি দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করেছে ইমরান। আমি অচল কিভাবে পালিয়ে যাবো? মা আমাকে বাচাও’।

এভবেই মৃত্যুর আগে মায়ের কাছে শেষ আকুতি ছিলো মেঘলার। এরপরই যৌতুক লোভী স্বামীর হাতে জীবন দিতে হলো ভোলার মেয়ে ফাতেমাতুজ জহরা মেঘলাকে ।

সোমবার সন্ধ্যায় ৬ টার দিকে লক্ষ্মীপুর রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার গ্রামের গৃহবধূ মেঘলাকে স্বামীর বাড়ির বসত ঘরের আড়ার সাথে ওড়না ঝুলানো অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মেঘলার পরিবারের অভিযোগ তাকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে মেরে আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, ভোলা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডেল হাসপাতাল সড়কের মোঃ শহীদুল হক টিটুর একমাত্র আদরের মেয়ে ফাতেমাতুজ জহরা মেঘলা (২৩) এর সাথে ২০১৩ সালে লক্ষ্মীপুর জেলা রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার ৩ নং ওয়ার্ডে সবুজগ্রামের বাসিন্দা শাজাহান মাস্টারের ছেলে মোঃ ইমরান ওরফে এনাম (৩০) এর সাথে সামাজিকভাবে বিবাহ হয়। বিবাহের ২ বছর না যেতে মেঘলাকে যৌতুকের জন্য মারধর করতো স্বামী ইমরান।

মেঘলার বাবা ও মা অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময় মেঘলাকে যৌতুকের জন্য মারধর করতো স্বামী ইমরান। গত সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবীতে বসত ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে মেঘলাকে মারধর শুরু করে ইমরান ও তার পরিবারের লোক জন। মেঘলার ডাক চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে তাদেরকে ঘরে প্রবেশ করতে দেয়নি ইমরানের পরিবার। সেই সময় মৃত্যু হয় মেঘলার। এরপর ইমরান নিজেকে রক্ষা করার জন্য মেঘলাকে হত্যা করে নিজ বসত ঘরে আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে যায় ।

মেঘলার মৃত্যু’র সংবাদটি আত্মীয় স্বজন ও রামগতি থানার পুলিশ জানতে পেলে দ্রুত ঘটনা স্থলে গিয়ে মেঘলার লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্ত’র জন্য লক্ষি¥পুর সরকারি হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।

এঘটনায় মেঘলার বাবা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামী করে রামগতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ৩ আসামী শাজাহান মাস্টারকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার রাতে মেঘলার আত্মীয় স্বজনের কাছে লাশটি হস্তান্তর করে। বুধবার ভোর রাতে রামগতি উপজেলা থেকে ভোলায় এনে পারিবারিক কবরষ্থানে মেঘলার দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এবিষয়ে মুঠোফোনের মাধ্যমে রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন ঘটনার সততা নিশ্চিত করে জানান, মেঘলার বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলার ৩নং আসামী শাজাহানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামীরা পলাতক রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের জোর চেষ্টা চলছে।