নেইমারকে নির্ভার রাখছেন তিতে

ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোলের পর ব্রাজিল তারকা নেইমারের কাঁধে প্রত্যাশার চাপটা যেন আরেকটু বাড়লো। তবে কেবল একা নেইমারের ওপর নির্ভর করতে চান না কোচ তিতে। সেরা ফর্মে ফেরার আগে নেইমারকে তাই চাপমুক্ত রাখতে চান এই কোচ।

পায়ের ইনজুরি নিয়ে মাঠের বাইরে ছিলেন তিন মাস। ফিরেছেন রবিবার ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ দিয়ে। প্রাক-বিশ্বকাপ প্রীতি ম্যাচটিতে করেছেন একটি গোলও। লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডে অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচটিতে তার গোলে শুরুতেই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। যোগ করা সময়ে গোল করে সেলেসাওদের ২-০ ব্যবধানের জয় নিশ্চিত করেন লিভারপুলের ঘরের ছেলে রবার্তো ফিরমিনো।

বিশ্বকাপে নেইমারের উপরে অনেক প্রত্যাশা থাকবে, কিন্তু দলের সবচাইতে বড় তারকার কাছে প্রত্যাশায় একটু লাগাম পরাতে চান তিতে। ম্যাচশেষে এক সংবাদ সম্মেলনে নেইমারের অসাধারণ প্রত্যাবর্তন নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক সময়ের আগেই আজকে মাঠে ফিরেছে সে এবং আমার প্রত্যাশার চেয়ে ভালো খেলেছে। কিন্তু সে এখনো ফিটনেস ফিরে পেতে কাজ করে যাচ্ছে। তার অনুশীলন পরিপূর্ণ হবার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই পারি আমরা।’

ক্রোয়েশিয়া ম্যাচের পারফরমেন্সে ভর করে প্রত্যাশার চাপে নেইমারকে পিষ্ট না করার পরামর্শ দিলেন ব্রাজিল কোচ। তিনি বলেন, ‘হয়তবা তৃতীয় কিংবা চতুর্থ ম্যাচে সেরা ফর্মে ফিরতে পারে সে। এর আগে তার খেলার মানে চড়াই-উতরাই থাকবেই। দয়া করে আজকের খেলার উপর ভর করে তার কাছে বড় কিছু প্রত্যাশা করে বসবেন না।’

দলে ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার গ্যাব্রিয়েল জেসুস, সদ্য বার্সায় যোগ দেওয়া ফেলিপে কৌতিনিয়ো, চেলসি উইঙ্গার উইলিয়ান আর লিভারপুল স্ট্রাইকার রবার্তো ফিরমিনোদের মতো খেলোয়াড় থাকায় আক্রমণভাগে অনেক বিকল্প আছে ব্রাজিল কোচের হাতে।

অ্যানফিল্ডের ম্যাচটিতে কৌতিনিয়ো, নেইমার, উইলিয়ান ত্রয়ী দারুণ খেলেছেন, মুহুর্মুহু আক্রমণে ত্রাশ ছড়িয়েছেন ক্রোয়েশিয়া রক্ষণে। এ তিনজনকে বিশ্বকাপে একত্রে আক্রমণভাগে খেলানোর ইঙ্গিতও দিলেন তিতে, ‘ম্যাচে অসাধারণ ছিল তারা। সম্ভাবনা আছে (বিশ্বকাপে তাদের একত্রে খেলার), কিন্তু আমি উদ্বিগ্ন, উন্নতির জন্য সময় দিয়ে কাজ করে যেতে হবে আমাকে। সম্ভাবনা অবশ্যই আছে।’

বিশ্বকাপের আগে ব্রাজিলের শেষ প্রস্তুতি ম্যাচ সদ্যই জার্মানিকে হারানো অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে। ম্যাচটিতে নেইমারকে আরও বেশি সময়ের জন্য মাঠে রাখবেন কোচ তিতে, এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। এরপর ১৭ জুন সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে ব্রাজিলের হেক্সা মিশন। ‘ই’ গ্রুপে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ আরো পাচ্ছে কোস্টারিকা ও সার্বিয়াকে।

গত বিশ্বকাপে, ২০১৪ সালে নিজেদের মাটিতে সেমিফাইনাল অবধি গিয়েছিল নেইমাররা। তবে, চ্যাম্পিয়ন জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে হেরে দুঃস্বপ্নের মতো শেষ করতে হয় ব্রাজিল। কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতলেও ইনজুরি নিয়ে টুর্নামেন্ট শেষ হয়ে যায় নেইমারের।

এবার অবশ্য বেশ ক’দিন হলো এই আসরের অন্যতম ফেবারিট দল হিসেবেই উচ্চারিত হচ্ছে ব্রাজিলের নাম। বিশেষ করে বাছাইপর্বে দলটির পারফরম্যান্সই তাদের এগিয়ে রাখছে বাকিদের চেয়ে। অপরাজিত বাছাইপর্ব পার করা ব্রাজিল ১৮টি ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ১৬টিতেই। ড্র হয়েছে বাকি দু’টি ম্যাচ। গোল হজম করেছে মাত্র তিনটি।