ভয় ছিল আফগান স্পিনার রশীদ খানকে নিয়ে। সেটিই সত্যি হলো। রশীদ খানের সঙ্গে অন্য দুই স্পিনার মোহাম্মদ নবী এবং মুজিব উর রহমানও ভোগালেন বাংলাদেশকে। আবার পেসার শাপুর জাদরান রান দিলেও উইকেট নিয়েছেন তিনটি। যার ফলে লজ্জাজনক পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো বাংলাদেশকে। রবিবার ভারতের দেরাদুনে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৪৫ রানে হারল বাংলাদেশ। সিরিজের পরবর্তী ম্যাচ আগামী মঙ্গলবার।
এদিন আফগানিস্তানের দেয়া ১৬৮ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১৯ ওভারে ১২২ রান সংগ্রহ করে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন লিটন দাস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৯ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আফগানিস্তানের পক্ষে রশীদ খান তিন ওভার বল করে ১৩ রান দিয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন। মুজিব উর রহমান চার ওভার বল করে ২০ রান দিয়ে একটি উইকেট শিকার করেন। চার ওভার বল করে ২১ রান দিয়ে দুইটি উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ নবী। শাপুর জাদরান চার ওভার বল করে ৪০ রান দিয়ে তিনটি উইকেট শিকার করেন। করিম জানাত চার ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে একটি উইকেট শিকার করেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মুজিব উর রহমানের বলে এলবিডব্লিউ হন তামিম ইকবাল। এরপর ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মোহাম্মদ নবীর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ হন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এরপর লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
দলীয় ৬৪ রানে মোহাম্মদ নবীর বলে এলবিডব্লিউ হন লিটন দাস। এরপর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বাঁধেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ম্যাচে তখনও বাংলাদেশের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু যে রশীদ খানকে নিয়ে ভয় সেই রশীদ খান ১১তম ওভারে প্রথমবারের মতো বোলিংয়ে এসে পরপর দুই বলে সাজঘরে ফেরান যথাক্রমে মুশফিকুর রহিম ও সাব্বির রহমানকে। বাংলাদেশের আশা মূলত তখনই শেষ।
তারপরও রিয়াদ ও সৈকতকে নিয়ে যে ক্ষীণ আশা ছিল সেই আশা শেষ হয় ১৭তম ওভারে। এই ওভারে রশীদ খানের বলে উসমান ঘানির হাতে ক্যাচ হন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শাপুর জাদরানের করা ১৮তম ওভারে তিনটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড হন আবুল হাসান রাজু। চতুর্থ বলে উসমান ঘানির হাতে ক্যাচ হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ওভারের শেষ বলে বোল্ড হন রুবেল হোসেন।
এদিন প্রথমে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ১৬৭ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪০ রান করেন মোহাম্মদ শাহজাদ। ১৮ বল খেলে ৩৬ রান করেন সামিউল্লাহ শেনওয়ারি। আট বল খেলে ২৪ রান করেন শফিকুল্লাহ।
টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান চার ওভার বল করে ১৯ রান দিয়ে একটি উইকেট শিকার করেন। এক ওভার বল করে এক রান দিয়ে দুইটি উইকেট শিকার করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এছাড়া আবুল হাসান রাজু ২টি, আবু জায়েদ রাহি ১টি ও রুবেল হোসেন ১টি করে উইকেট শিকার করেন। ১৯তম ওভারের শেষ বলে করিম জানাতের হাতে ক্যাচ হন আবু জায়েদ রাহি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফল: ৪৫ রানে জয়ী আফগানিস্তান।
আফগানিস্তান ইনিংস: ১৬৭/৮ (২০ ওভার)
(মোহাম্মদ শাহজাদ ৪০, উসমান ঘানি ২৬, আসঘার স্টানিকজাই ২৫, নাজিবউল্লাহ জাদরান ২, মোহাম্মদ নবী ০, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি ৩৬, শফিকুল্লাহ ২৪, রশীদ খান ৬*, করিম জানাত ০, মুজিব উর রহমান ০*; আবু জায়েদ রাহি ১/৪২, নাজমুল ইসলাম অপু ০/২৪, রুবেল হোসেন ১/৩২, সাকিব আল হাসান ১/১৯, আবুল হাসান রাজু ২/৪০, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ০/৩, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২/১)।
বাংলাদেশ ইনিংস: ১২২ (১৯ ওভার)
(তামিম ইকবাল ০, লিটন দাস ৩০, সাকিব আল হাসান ১৫, মুশফিকুর রহিম ২০, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান ০, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ১৩, আবুল হাসান রাজু ৫, নাজমুল ইসলাম অপু ৪*, রুবেল হোসেন ০, আবু জায়েদ রাহি ১; মুজিব উর রহমান ১/২০, শাপুর জাদরান ৩/৪০, মোহাম্মদ নবী ২/২১, করিম জানাত ১/২৭, রশীদ খান ৩/১৩)।
প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: রশীদ খান (আফগানিস্তান)।