কাতারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন মোহাম্মদ আল আতিয়াহ বলেছেন, তার দেশের সঙ্গে ইরানের মতবিরোধ থাকলেও যুদ্ধ গ্রহণযোগ্য নয়। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধানে এগোতে চায় কাতার। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, ইরানের ওপর হামলা চালাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে আহ্বান জানানোর সমালোচনা করেছেন তিনি।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনে একই সঙ্গে কাতারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও উপপ্রধানমন্ত্রী আতিয়াহর করা ওই সমালোচনার লক্ষ্যবস্তু ছিল ইরানের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব। আতিয়াহ সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইরানবিরোধী যুদ্ধের ফলাফল হবে ভয়াবহ।
খালিদ বিন মোহাম্মদ আল আতিয়াহর ভাষ্য, কাতারের সঙ্গে ইরানের ‘অনেক পার্থক্য’ রয়েছে। কিন্তু সে কারণে ‘যুদ্ধ ডেকে আনার’ কোনও যথার্থতা নেই। তিনি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে কি ইরানের ওপর হামলা চালানোর আহ্বান জানানো উচিত? বাইরের এবং এই অঞ্চলের কয়েকটি দেশ যে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বাধানোর চেষ্টা করছে, তা সফল ফলে পরিণতি খুব খারাপ হবে।’
আল জাজিরা লিখেছে, সৌদি আরব আরও কয়েকটি আরব অঞ্চলের দেশের সঙ্গে মিলে গত বছরের জুন থেকে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করে রেখেছে। ওই অবরোধের কারণে কাতারকে বিপর্যয়ের মধ্যে পড়তে হয়েছে। বস্তুত সৌদির নেতৃত্বে কাতারের ওপর অবরোধ আরোপ করার সময়েই দেশটির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কাতার সে অভিযোগ নাকচ করেছে। অবরোধ তুলে নিতে কাতারকে ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের শর্ত দেওয়া হয়েছিল। কাতার সে শর্তও মানেনি।
কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন মোহাম্মদ আল আতিয়াহ সম্মেলনে দেওয়া ভাষণে আরও বলেছেন, ‘ইরান প্রতিবেশী দেশ। আমরা ইরানকে আমন্ত্রণ জানাবো, টেবিলে সব কাগজপত্র গুছিয়ে নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করব।’
ইরানের ওপর হামলা চালাতে কাতারের বিমান ঘাঁটি ব্যবহার করতে দেয়া হবে কিনা জানতে চাইলে আতিয়াহ মন্তব্য করেছেন, তার দেশ ‘যুদ্ধের ভক্ত’ নয়। বরং মিথস্ক্রিয়া ও সংলাপকেই সমর্থন করে।
আল জাজিরা লিখেছে, কাতারে বর্তমানে ১০ হাজার মার্কিন সেনার উপস্থিত রয়েছে। ইরাকের ইসলামিক স্টেট ও আফগানিস্তানের তালেবানবিরোধী অভিযানের জন্য তাদের সেখানে পাঠানো হয়েছিল।