ঘটনায় থানা থেকে ছুটে আসে পুলিশ। তাঁকে অনেক চেষ্টায় উদ্ধার করে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন তিনি। ফলে রীতিমত আতঙ্কিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
ফের আত্মহত্যার চেষ্টা বালুরঘাট কলেজের এক অধ্যাপিকার। শনিবার রাতে বালুরঘাট থানার সামনে ঘটা এই ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
জ্যোতিকুমারী শর্মা নামের অর্থনীতি বিভাগের ওই অধ্যাপিকা মাস কয়েক আগেও কলেজের সামনে হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। শনিবার রাতে ফের তিনি সহকর্মীদের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে মেন রোডে শুয়ে পড়েন। এমনকি তাঁর ব্যাগে থাকা ছোট্ট একটি ছুরি বের করে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছেন।
ঘটনায় থানা থেকে ছুটে আসে পুলিশ। তাঁকে অনেক চেষ্টায় উদ্ধার করে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন তিনি। ফলে রীতিমত আতঙ্কিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
হাসপাতালের নার্স ও অন্যান্য কর্মীরা কেউ তাঁর কাছে গেলে সপাটে চড় মারেন বলেও অভিযোগ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে চিকিৎসকদের মতে তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ।
বালুরঘাট কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে বালুরঘাট কলেজে অর্থনীতি বিষয়ের অধ্যাপিকা হিসেবে যোগ দেন আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ার জ্যোতিকুমারী শর্মা। বালুরঘাটের ব্রতী সংঘ পাড়ার কলেজ আবাসনের দ্বিতলে থাকেন তিনি। অভিযোগ, আবাসনের অন্যান্য আবাসিকদের সঙ্গে অধ্যাপিকার প্রতিদিন কোনও না কোনও বিষয়ে বিবাদ লেগেই থাকে। এমনকি কলেজেও অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও বচসা চলে।
অধ্যাপিকার আচরণে ২০১৭ সালের ২২ জুন কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়েই জরুরি বৈঠকে বসেছিল। সেই বৈঠকে অধ্যাপিকা অভিযোগ করেন যে, তাঁকে সহকর্মীরা মানসিক ভাবে নির্যাতন করেছেন। এর প্রতিবাদে সেদিন বিকেলে বালুরঘাট কলেজ সংলগ্ন পুরসভার সামনে প্রকাশ্য রাস্তায় হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন জ্যোতিকুমারী। সেই ঘটনার প্রায় এক বছর পরে একই অভিযোগ তুলে বালুরঘাট থানার সামনে রাস্তায় বসে পড়েন ও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
অধ্যাপিকা জ্যোতিকুমারী শর্মার অভিযোগ, তিনি কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকে তার কলেজের সহকর্মী এবং আবাসনের প্রতিবেশীরা তাঁর সঙ্গে অসহযোগিতা করে চলেছেন। এমন কী প্রতিনিয়ত তাঁকে মানসিক ভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকবার মিটিং ডেকেছিল। কিন্তু সেখানে তাঁর কোনো বক্তব্যই শোনা হয় না সেই মিটিংএ। ঘটনায় পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোন সুরাহা পাচ্ছেন না বলেও অধ্যাপিকা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে অধ্যাপিকার অভিযোগ তাঁর সমস্যা জানাতে তিনি বালুরঘাট কলেজের অধ্যক্ষ ডাক্তার পঙ্কজ কুন্ডুর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।
অন্য দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, বিষয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে যে, আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসা করে নেওয়ার। পাশাপাশি অধ্যাপিকার পরিবারের লোকেদের সঙ্গে থানার তরফে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে বলেও আধিকারিক জানিয়েছেন।