কাতারকে অত্যাধুনিক এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করবে রাশিয়া। যদিও আপত্তি রয়েছে সৌদি আরবের। রুশ সংসদের উচ্চ কক্ষের সদস্য ও প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা কমিটির উপ-চেয়ারম্যান আলেক্সেই কন্দ্রাতিয়েভ বলেছেন, সৌদি আরব বিরোধিতা করলেও কাতারকে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করবে রাশিয়া।
স্পুটনিক নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিনিয়র এই আইনপ্রণেতা বলেন, রাশিয়া নিজের স্বার্থ দেখবে। কাতারকে এস-৪০০ সরবরাহ ও রাষ্ট্রীয় কোষাগারের জন্য অর্থ আয়। এটার সঙ্গে সৌদি আরবের অবস্থানের কোনও সম্পর্ক নেই, রাশিয়া পরিকল্পনার বদল হবে না। ওই অঞ্চলে সৌদি আরবের প্রভাব রয়েছে এটা স্পষ্ট কিন্তু কাতারও এস-৪০০ ব্যবস্থা দিয়ে নিজেদের সামরিক শক্তি বাড়াতে পারবে। ফলে সৌদি আরবের উদ্বেগের বিষয়টি অনুধাবন করা যায়।
আলেক্সেই কন্দ্রাতিয়েভ জানান, রাশিয়া ও কাতারের মধ্যে যে কোনও ধরনের চুক্তির বিরোধিতা করতে সৌদি আরবকে নিয়মিতই বলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে ফ্রান্সের দৈনিক পত্রিকা লে মন্ডে জানায়, সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান কাতারের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছিলেন। কাতার যদি রাশিয়ার নির্মিত এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করে তাহলে কাতারের বিরুদ্ধে সামরিকসহ প্রয়োজনীয় যে কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তিনি জানিয়েছিলেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে লেখা এক চিঠিতে সৌদি বাদশাহ কাতারের এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।
চিঠিতে সৌদি বাদশাহ কাতারের ওপর চাপ বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁকে। কাতার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ক্রয় করলে তা সৌদি আরবের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে দাবি করেছিলেন বাদশাহ সালমান।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এলিসি প্রাসাদের সূত্রের বরাতে চিঠিটি হাতে পেয়েছে লে মন্ডে। এতে সৌদি বাদশাহ লিখেছেন, এমন পরিস্থিতিতে সৌদি আরব এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গুড়িয়ে দিতে যে কোনও পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে, সামরিক পদক্ষেপও রয়েছে এর মধ্যে।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে রাশিয়ায় নিযুক্ত কাতারের রাষ্ট্রদূত জানান, এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পর্যায়ে রয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালের অক্টোবরে উভয় দেশ সামরিক ও কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধির চুক্তি স্বাক্ষর করে। একই সময়ে সৌদি আরবও বাদশাহ সালমানের মস্কো সফরে একই ধরনের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয়ের চুক্তি করেছিল রাশিয়ার সঙ্গে।
প্রায় এক বছর ধরে কাতারের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বে চারটি আরব দেশ অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক অবরোধ জারি রেখেছে।