বাংলাদেশে আর কোনো দিন আসবেন না কবির সুমন। সম্প্রতি বাংলাদেশের সময় টিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন ভারতের বাংলা গানের এই অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে যা চেনার আমি চিনে নিয়েছি।’
জানালেন, সর্বশেষ তিনি যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন, তখন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে তার একক গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। কিন্তু কিছু মানুষের বাধার মুখে সেই অনুষ্ঠানে তিনি গান গাইতে পারেননি। বললেন, ‘বাংলাদেশে আমার সন্তানপ্রতিম কয়েকজন ছেলে চেষ্টা করল আমার একটা একক অনুষ্ঠান করতে। সেটা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে। তারা হল বুক করল। তাদের হাতে সেই কাগজ ছিল। আয়কর এবং অন্য যা কিছু দেয়ার, সব তারা দিয়েছে। আমি ঢাকায় গিয়ে জানতে পারলাম, আমাকে ওখানে গান গাইতে দেয়া হবে না। বাংলাদেশের কারা যেন ওখানে বাধা দিচ্ছে। তারা বলছে, কবির সুমন ভারতের শিল্পী, তাকে এখানে গান গাইতে দেয়া হবে না।’
এই সাক্ষাৎকারে কবির সুমন জানান, ১৯৯৬ সাল আর ১৯৯৮ সালে তিনি বাংলাদেশে দুটি সংগীত সফর করেন। প্রতি সফরে পাঁচটা করে মোট ১০টি অনুষ্ঠানে তিনি গান করেছেন। বললেন, ‘এই টাকাটা তুলেছিলাম মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য। কত টাকা আমি জানি না। নিজে একটা পয়সাও আমি নিইনি। আমি ভারতের একজন সংগীতশিল্পী, বাংলাদেশকে ভালোবাসি। আমার দেশ যদি বাংলাদেশ হতো, খুব ভালো লাগত। ওই সময় সুফিয়া কামাল খালাম্মার সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছিল। আমার ভাবতে খুব ভালো লাগে।’
কবির সুমন আরো বলেন, ‘দুটি সংগীত সফরে কষ্ট করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের জন্য টাকা তুলেছি। প্রতিটি শোয়ে আমি পৌনে তিন ঘণ্টা করে গান করেছি। একটি কানাকড়িও নিইনি। কেন নেব? এটা আমার কর্তব্য মনে করেছি। কিন্তু তারা সেসব ভুলে গেছেন। এবার তারা আমাকে আটকে দিলেন। বাধা দিলেন। এরপর আমি আর বাংলাদেশে যাইনি। বাংলাদেশে আর যাব না।’
কবির সুমন একজন ভারতীয় বাঙালি গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা, বেতার সাংবাদিক, গদ্যকার ও সংসদ সদস্য। তার পূর্বনাম সুমন চট্টোপাধ্যায়। ২০০০ সালে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি তার পুরনো নাম পরিত্যাগ করেন। সুমন একজন বিশিষ্ট আধুনিক ও রবীন্দ্রসংগীত গায়ক।